Monday, April 21, 2025
spot_imgspot_img
Homeআন্তর্জাতিকনিরাপত্তা ও জনসেবার চাপ, পাকিস্তান থেকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে হাজার হাজার আফগান

নিরাপত্তা ও জনসেবার চাপ, পাকিস্তান থেকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে হাজার হাজার আফগান

নথিপত্রহীন এবং অস্থায়ীভাবে পাকিস্তানে অবস্থানরত আফগান নাগরিকদের নিজ দেশে ফিরিয়ে দিচ্ছে পাকিস্তান সরকার। অতিরিক্ত শরণার্থীর ভার বহন করতে না পারার অজুহাত দেখিয়ে দেশটি জানিয়েছে, তারা এত বিপুল সংখ্যক মানুষকে আর আশ্রয় দিতে অক্ষম।

পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জনসেবা ব্যবস্থার ওপর অতিরিক্ত চাপ এবং নিরাপত্তা শঙ্কা বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট আফগান নাগরিকদের ৩০ এপ্রিলের মধ্যে দেশ ত্যাগ করতে বলা হয়েছে।

তালেবান সরকারের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি মাসেই প্রায় ১৯ হাজার ৫০০ আফগানকে পাকিস্তান থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত মোট ৮০ হাজারের বেশি মানুষ পাকিস্তান ছেড়েছেন। প্রতিদিন গড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ পরিবারকে দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে প্রায় ২০ লাখ আফগান নাগরিককে ফেরত পাঠানো হতে পারে।

এই পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে শনিবার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে পৌঁছান পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। সেখানে তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি এই ফেরত পাঠানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে পাকিস্তানে বসবাসরত আফগান নাগরিকের সংখ্যা প্রায় ৩৫ লাখ। এর মধ্যে প্রায় সাত লাখ ২০২১ সালে তালেবানের পুনরুত্থানের পর দেশ ছেড়েছিলেন।

পাকিস্তান সরকারের ভাষ্য অনুযায়ী, অতিরিক্ত শরণার্থী উপস্থিতির কারণে দেশে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে এবং জনসেবার ক্ষেত্রেও মারাত্মক চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। পাশাপাশি সীমান্তে পাকিস্তানি বাহিনী ও আফগান বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষও বেড়েছে। পাকিস্তান এর জন্য আফগানিস্তানে অবস্থানরত জঙ্গিদের দায়ী করলেও তালেবান সরকার এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।

তোরখাম সীমান্তে পাকিস্তান থেকে ফেরত পাঠানো আফগানদের অনেকেই হতাশা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। একজন ভুক্তভোগী সায়েদ রহমান বলেন, “আমি সারাটি জীবন পাকিস্তানে কাটিয়েছি, এখানেই সংসার গড়েছি। এখন আমি কী করব?” তিন কন্যার জনক সালেহ জানান, তাঁর মেয়েরা পাকিস্তানে পড়াশোনা করত, কিন্তু আফগানিস্তানে ১২ বছরের বেশি বয়সী মেয়েদের পড়াশোনার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তিনি বলেন, “আমি চাই না আমার মেয়েরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হোক। শিক্ষার অধিকার সবার রয়েছে।”

আরেকজন ফেরতপ্রত্যাশী বলেন, “আমার সন্তানরা কখনো আফগানিস্তান দেখেনি। আমি নিজেও জানি না দেশটা এখন কেমন। কাজ খুঁজে পেতে হয়তো বছরখানেক লেগে যাবে। আমরা চরম অসহায় বোধ করছি।”

উল্লেখ্য, ফেরত আসা প্রত্যেক আফগান নাগরিককে ৪ হাজার থেকে ১০ হাজার আফগানি মুদ্রা সহায়তা হিসেবে দিচ্ছে তালেবান প্রশাসন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments