ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের বৈসরান উপত্যকায় সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৬ জন পর্যটক। কয়েকটি স্থানীয় সূত্র নিহতের সংখ্যা ২৯ বললেও, এখনো চূড়ান্ত সংখ্যা নিশ্চিত নয়। হামলাটি অত্যন্ত পরিকল্পিত ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে, কারণ সন্ত্রাসীরা সাধারণ পোশাকে স্থানীয়দের সঙ্গে মিশে ছিল এবং শুধুমাত্র ঘোড়ায় বা পায়ে হেঁটে পৌঁছানো যায় এমন দুর্গম এলাকায় হামলাটি চালানো হয়।
এই মর্মান্তিক ঘটনার পর সৌদি আরব সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সফর সংক্ষিপ্ত করে রাতেই দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর প্রতি সহানুভূতি ও সমর্থন জানিয়ে বিশ্ব নেতারা বার্তা পাঠিয়েছেন।
বিশেষভাবে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মোদিকে ফোন করে হামলার নিন্দা জানান এবং বলেন, “সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্র সবসময় ভারতের পাশে আছে। আমরা সম্ভাব্য সব সহায়তা দিতে প্রস্তুত।” ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল এই ফোন কলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ট্রাম্প নিজ মালিকানাধীন সামাজিক মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ এক বার্তায় লেখেন, “কাশ্মীর থেকে ভয়াবহ খবর পেয়েছি। নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। ভারতের জনগণ এবং প্রধানমন্ত্রী মোদির প্রতি আমাদের গভীর সহানুভূতি রয়েছে।”
ঘটনার পরপরই দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বাসভবনে জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য পর্যায়ের নিরাপত্তা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ও লেফটেন্যান্ট গভর্নরের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়।
লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা জানান, হামলাকারীদের ধরতে বড় পরিসরের সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান শুরু হয়েছে। তিনি কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “পাহালগামের এই বর্বর হামলার জবাব দিতে হবে, এবং অপরাধীদের চরম মূল্য দিতে হবে।”
এই ঘটনায় ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গন ও সাধারণ মানুষের মধ্যে শোক এবং ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে, বিশেষ করে পর্যটন-নির্ভর অঞ্চলে এ ধরনের হামলা রোধে আরও কঠোর পদক্ষেপের দাবি উঠেছে।
4o