Wednesday, April 23, 2025
spot_imgspot_img
Homeআন্তর্জাতিককাশ্মীর হামলায় কাঁপলো ভারত: জেডি ভ্যান্সের সফরে ছায়া সন্ত্রাসের

কাশ্মীর হামলায় কাঁপলো ভারত: জেডি ভ্যান্সের সফরে ছায়া সন্ত্রাসের

ভারতে সফররত মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বর্তমানে চার দিনের রাষ্ট্রীয় ভ্রমণে রয়েছেন। তার সফরের দ্বিতীয় দিনে, অর্থাৎ মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল), কাশ্মীরের পাহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে, যা সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে অন্যতম বড় আক্রমণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে এবং দেশজুড়ে চরম উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

জেডি ভ্যান্সের ভারত সফর ভারত-মার্কিন কৌশলগত অংশীদারত্বকে আরও সুসংবদ্ধ করার এক গুরুত্বপূর্ণ প্রয়াস। এছাড়াও, এই সফরে তার পরিবারকে সঙ্গে আনা এবং ভারতীয় সংস্কৃতি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার দৃষ্টিভঙ্গি ব্যক্তিগত সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতাও প্রকাশ করে।

সফরের প্রথম দিন, নয়াদিল্লির ৭ লোক কল্যাণ মার্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ভ্যান্স ও তার পরিবার। মোদি তাকে আন্তরিকভাবে আলিঙ্গন করেন এবং ভ্যান্সের স্ত্রী ঊষার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেন। পুরো বৈঠকটি ছিল পারিবারিক পরিবেশে উষ্ণ ও আন্তরিক।

এই সফরের আওতায় জেডির পরিবার ভারতের বিভিন্ন ঐতিহাসিক ও পর্যটন স্থানে ভ্রমণ করবে বলে জানা গেছে। তবে এমন এক সময়েই পাহেলগামে এই বর্বরোচিত হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার পর জেডি এক বিবৃতিতে বলেন, “কাশ্মীরে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের প্রতি ঊষা এবং আমি গভীর সমবেদনা জানাই। এই সুন্দর দেশের আতিথেয়তায় আমরা অভিভূত। এই দুঃখজনক মুহূর্তে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে রয়েছি।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ফোন করে হামলার নিন্দা জানান এবং ভারতের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল এক্সে দেয়া বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এছাড়া, ট্রাম্প তার মালিকানাধীন সামাজিক প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ লিখেছেন, “কাশ্মীর থেকে যে খবর এসেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমেরিকা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের পাশে রয়েছে। নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করছি এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করি।”

প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই ট্রাম্প ভারত-মার্কিন সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ করতে সচেষ্ট। মোদির সঙ্গে তার একাধিক বৈঠক ও ফোনালাপে এই বন্ধুত্বের পরিচয় পাওয়া গেছে, যেখানে তিনি বরাবরই ভারতের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন এবং দুই দেশের যৌথ সহযোগিতার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

কাশ্মীরের ঘটনায় ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী ইতিমধ্যে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে। তারা জানিয়েছে, হামলাকারীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে।

এদিকে, ভারতের বিতর্কিত ওয়াকফ বিল নিয়ে সংখ্যালঘু মুসলিমদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। হোলি উৎসব চলাকালে মুসলিমদের উপর নির্যাতন এবং মসজিদের সামনে ডিজে পার্টির মতো ঘটনাগুলোর ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।

কাশ্মীরের হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ) নামের একটি সংগঠন, যা ভারতের দাবি অনুযায়ী, পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী লশকর-ই-ত্যায়বার একটি শাখা সংগঠন। ২০১৯ সালে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর এই সংগঠনটি সক্রিয় হয়।

ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর দাবি, পাঁচ থেকে ছয়জন টিআরএফ সদস্য এই হামলায় অংশ নেয়। তবে তাদের মূল উদ্দেশ্য এখনো পরিষ্কার নয়। তদন্তের অগ্রগতি হলে আরও তথ্য প্রকাশ পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments