কোপা দেল রে ফাইনালকে কেন্দ্র করে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে স্পেনের ফুটবল অঙ্গনে। দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী—রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার মধ্যে শনিবার (২৬ এপ্রিল) অনুষ্ঠিতব্য বহুল প্রতীক্ষিত ম্যাচটি এখন শঙ্কার মুখে, কারণ রেফারি নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্ক ঘিরে রিয়াল শিবির থেকে ম্যাচ বয়কটের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার রিয়ালের নিজস্ব টিভি চ্যানেল RMTV এক বিশ্লেষণধর্মী ভিডিও প্রকাশ করে, যেখানে কোপা দেল রে ফাইনালের রেফারি রিকার্দো দে বুরগোস বেঙ্গোএচিয়ার নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়। ভিডিওতে আগে বার্সেলোনার পক্ষে দেওয়া তার কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্ত তুলে ধরা হয় এবং দুর্নীতির সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেওয়া হয়।
এর প্রতিক্রিয়ায় শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে আবেগে ভেঙে পড়েন বুরগোস। তিনি জানান, তার ছেলেকে স্কুলে ‘চোরের ছেলে’ বলা হয়েছে, যা তার ওপর গভীর মানসিক চাপ তৈরি করেছে। তিনি স্পষ্টতই জানান, এই অবস্থায় মাঠে নেমে ম্যাচ পরিচালনা করা তার পক্ষে কঠিন।
রেফারির মানসিক অবস্থার প্রশ্ন তুলে রিয়াল মাদ্রিদ স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের (RFEF) কাছে রেফারিং প্যানেল পরিবর্তনের দাবি জানায়। তবে ফেডারেশন সেই অনুরোধ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে জানায়, ম্যাচের আগে রেফারি পরিবর্তন করা একটি ক্লাবের অনভিপ্রেত হস্তক্ষেপ বলে বিবেচিত হবে।
এরপর থেকেই পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়ে ওঠে। রিয়াল মাদ্রিদ তাদের নির্ধারিত ম্যাচ-পূর্ব অনুশীলন ও সংবাদ সম্মেলন বাতিল করে দেয়। স্পেনের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, রিয়াল মাদ্রিদ এখন ম্যাচ বয়কটের ব্যাপারেও চিন্তা করছে, যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কিছু জানানো হয়নি।
শুক্রবার রাতে ক্লাবের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে রিয়াল জানায়, “রেফারিদের পক্ষ থেকে যেভাবে সংবাদ সম্মেলনে আমাদের ক্লাবের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ দেখানো হয়েছে, তা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। এতে স্পষ্ট যে, রেফারিদের একটি অংশ আমাদের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব পোষণ করে। এ ধরনের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ ফাইনালের ন্যায়বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।”
রিয়াল মাদ্রিদ এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ম্যাচ বয়কটের সিদ্ধান্ত না জানালেও, ফুটবল ফেডারেশন তাদের অবস্থানে অনড় রয়েছে। ফলে শনিবারের ফাইনাল আদৌ অনুষ্ঠিত হবে কি না, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে বড়সড় অনিশ্চয়তা।
যদি শেষ পর্যন্ত রিয়াল মাঠে না নামে, তবে বার্সেলোনা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কোপা দেল রে-র শিরোপা ঘরে তুলবে। এটি হবে তাদের চলতি মৌসুমের প্রথম বড় ট্রফি এবং সম্ভাব্য ইউরোপিয়ান ট্রেবল জয়ের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
এখন ফুটবল বিশ্ব তাকিয়ে আছে—মাঠে গড়াবে কি না বছরের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত ‘এল ক্লাসিকো’ ফাইনাল।