চলমান রাজনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আরও একটি বড় পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। এবার ইসলামাবাদ থেকে যেকোনো ধরনের পণ্য আমদানি সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। সরকারি সূত্র বলছে, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা এবং জননীতির স্বার্থে।
এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, পাকিস্তান থেকে সরাসরি অথবা তৃতীয় দেশের মাধ্যমে আসা সব ধরনের আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে। একই সঙ্গে, ভারতের কোনো বন্দরে পাকিস্তানি পতাকাবাহী জাহাজ ভিড়তে পারবে না বলেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, পাকিস্তান থেকে উৎপাদিত বা সেদেশ থেকে রপ্তানিকৃত যেকোনো ধরনের পণ্যের আমদানি বা ট্রানজিট নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তা যতই অনুমোদিত হোক না কেন। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। এ নিষেধাজ্ঞার ব্যতিক্রম কেবলমাত্র ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পূর্বানুমোদনের মাধ্যমে সম্ভব।
উল্লেখ্য, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একমাত্র স্থলবাণিজ্য পথ ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত ইতোমধ্যেই পেহেলগাম হামলার পর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এরপরও পাকিস্তান থেকে কিছু পণ্য পরোক্ষভাবে ভারতের বাজারে আসছিল। এই পণ্যগুলোর মধ্যে ওষুধ, ফল এবং তৈলবীজ অন্যতম। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর ভারত পাকিস্তানি পণ্যের ওপর ২০০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করায় বাণিজ্য অনেকাংশেই কমে যায়। এমনকি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারতের মোট আমদানির মাত্র ০.০০০১ শতাংশেরও কম ছিল পাকিস্তান থেকে আসা পণ্য।
অন্যদিকে, কাশ্মীরের সাম্প্রতিক প্রাণঘাতী হামলার পর প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনা আরও বেড়েছে। এরই মাঝে ভারত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলকে (IMF) অনুরোধ জানিয়েছে যেন পাকিস্তানকে দেওয়া ঋণ পুনর্মূল্যায়ন করা হয়। শুক্রবার (২ মে) ভারত সরকারের এক অভ্যন্তরীণ সূত্র রয়টার্সকে এ তথ্য জানায়।
সূত্রটি জানায়, গত বছর পাকিস্তান IMF থেকে ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ গ্রহণ করেছে। চলতি বছরের মার্চ মাসে তারা অতিরিক্ত ১.৩ বিলিয়ন ডলারের জলবায়ু স্থিতিশীলতা বিষয়ক ঋণ পেয়েছে। এই অর্থ সহায়তা পাকিস্তানের ৩৫০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে ইসলামাবাদ দাবি করেছে।
তবে নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, তারা চায় না পাকিস্তান এভাবে বৈদেশিক ঋণ সংগ্রহ করতে পারে। আইএমএফ-এর কাছে নরেন্দ্র মোদি সরকারের প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে উদ্বেগ জানানো হয়েছে এবং ঋণ প্রদানের বিষয়টি পুনরায় মূল্যায়নের দাবি জানানো হয়েছে।