জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দপ্তর (OHCHR) দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে সাংবাদিকদের ক্রমবর্ধমান মৃত্যুর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশ্ব প্রেস স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (২ মে) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এই সতর্কতা জারি করা হয়।
বিবৃতিতে জানানো হয়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় অন্তত ২১১ জন সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের মধ্যে ২৮ জন নারী। ইউনেসকোর তথ্য মতে, দায়িত্ব পালনকালে কমপক্ষে ৪৭ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। অপরদিকে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সর্বশেষ তথ্যে দেখা যায়, মঙ্গলবার পর্যন্ত ইসরায়েলি কারাগারে ৪৯ জন সাংবাদিক বন্দি রয়েছেন।
একজন সাংবাদিক জাতিসংঘকে জানান, এখন প্রেস ভেস্ট সাংবাদিকদের নিরাপত্তা দেয়ার বদলে তাদেরকে নিশানা বানানোর একটি চিহ্নে পরিণত হয়েছে। তিনি আরও দাবি করেন, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী সচেতনভাবে সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে, যা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধের আওতাভুক্ত। ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক কিছু সাংবাদিক জাতিসংঘকে জানিয়েছেন, জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাদের শারীরিকভাবে নির্যাতন, মানসিক নিপীড়ন এবং লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার শিকার হতে হয়েছে। জাতিসংঘের মতে, এসব ঘটনা ফিলিস্তিনি গণমাধ্যমের ওপর ভয়ভীতি প্রদর্শন ও নিপীড়নের বৃহৎ কাঠামোরই অংশ।
অন্যদিকে, হামাসের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় অগ্রগতি না থাকায় গাজায় স্থল অভিযানের বিস্তার ঘটানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল। দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার সংস্থা ক্যান জানিয়েছে, এই অভিযানের অংশ হিসেবে অতিরিক্ত রিজার্ভ সেনা মোতায়েন করা হবে। তবে সেনাদের ক্লান্তি এবং অতিরিক্ত দায়িত্ব নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্যের আহ্বানে নতুন এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
ক্যান আরও জানায়, দক্ষিণ গাজার মোরাগ করিডোর ও রাফাহ সীমান্তের মাঝামাঝি একটি নতুন মানবিক করিডোর তৈরি করছে ইসরায়েল, যেখানে নিরাপত্তা যাচাইয়ের পর ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের স্থানান্তর করা হবে। সেখানে মার্কিন বেসরকারি সংস্থাগুলোর তত্ত্বাবধানে ত্রাণ বিতরণ পরিচালিত হবে এবং তা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সরাসরি নজরদারিতে থাকবে।
গত শুক্রবার ইসরায়েলি সেনাপ্রধান এয়াল জামির এই নতুন অভিযান পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছেন।