ভারত যদি সিন্ধু নদে কোনো ধরনের বাঁধ বা অবকাঠামো নির্মাণে হাত দেয়, তবে সেটিকে ‘আগ্রাসন’ হিসেবে বিবেচনা করবে পাকিস্তান এবং সে অনুযায়ী পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানাবে—এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ।
সম্প্রতি কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর ঘটে যাওয়া ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক চরম উত্তেজনায় পৌঁছেছে। যদিও ভারত এ হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে, তবুও এখন পর্যন্ত কোনো নির্দিষ্ট প্রমাণ প্রকাশ করা হয়নি। হামলার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও প্রতিরক্ষা কার্যক্রমে পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ চলছেই। ভারত একতরফাভাবে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করেছে, পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল করেছে এবং ওয়াঘা-অটারি সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান ভারতীয় কূটনীতিক ও সামরিক উপদেষ্টাদের বহিষ্কার করেছে এবং শুধুমাত্র শিখ তীর্থযাত্রীদের ছাড়া বাকি ভারতীয়দের ভিসা প্রদান বন্ধ করেছে।
জিও নিউজের ‘নয়া পাকিস্তান’ শীর্ষক একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, “ভারত যদি সিন্ধু নদে কোনো স্থাপনা নির্মাণে আগায়, আমরা তা সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেব। এটি আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার অবিচ্ছেদ্য অংশ।”
তিনি আরও বলেন, “শুধু গোলাগুলিই আগ্রাসন নয়—পানি আটকে দেওয়া, জনগণকে অনাহার ও তৃষ্ণার মুখে ঠেলে দেওয়াও এক ধরনের যুদ্ধের শামিল।”
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে উদ্দেশ করে তিনি অভিযোগ করেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে তিনি রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার উদ্দেশ্যে নাটক সাজাচ্ছেন। খাজা আসিফ দাবি করেন, “ভারত এখনও পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত সমর্থন পায়নি এবং তাদের পক্ষ থেকে কোনো গ্রহণযোগ্য প্রমাণও তুলে ধরা হয়নি।”
তিনি জানান, এখনই সরাসরি যুদ্ধ নয়, বরং পাকিস্তান আন্তর্জাতিক চুক্তিভিত্তিক ও কূটনৈতিক প্ল্যাটফর্মে এই ইস্যুটি তুলে ধরবে। সিন্ধু পানি চুক্তিকে কেন্দ্র করে তারা তাদের অবস্থান পরিষ্কার করবে এবং প্রয়োজনীয় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহায়তা চাইবে।
শেষে তিনি সতর্ক করে বলেন, “ভারতের পক্ষে এ চুক্তি লঙ্ঘন করা সহজ হবে না, এবং পাকিস্তান এর মোকাবিলায় কৌশলগত সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।”