বাতাসে চাপা উত্তেজনা, আর আশঙ্কা—সামনে হয়তো ভয়াবহ সামরিক সংঘাত। ভারত-পাকিস্তান চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষিতে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় ভারতজুড়ে সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে। বিমান হামলার আশঙ্কায় দেশের বিভিন্ন রাজ্যে শুরু হয়েছে সিভিল ডিফেন্স মহড়া।
নয়াদিল্লি সরকার ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছে বিভিন্ন রাজ্যকে যুদ্ধ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বেসামরিক প্রতিরক্ষা মহড়া (সিভিল ডিফেন্স ড্রিল) চালানোর জন্য। সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, সাধারণ নাগরিকদের যুদ্ধকালীন করণীয় সম্পর্কে অবহিত করতেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই উদ্যোগ নিয়েছে। ১৯৭১ সালের পর এটাই সবচেয়ে বৃহৎ পরিসরের সিভিল ডিফেন্স মহড়া।
রাজস্থান সীমান্তে ভারতীয় বিমান বাহিনীর পূর্ব-পরিকল্পিত মহড়া শুরু হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার যুদ্ধের আশঙ্কাকে গুরুত্ব দিয়েই ব্যবস্থা নিচ্ছে। দিল্লি, পাঞ্জাব, জম্মু-কাশ্মীর এবং গুজরাটসহ প্রায় ৩০০ কৌশলগত অঞ্চলে এই মহড়া চলবে।
মহড়ার মূল উদ্দেশ্য হল—বিমান হামলার সতর্কতা সাইরেন বাজলে কিভাবে দ্রুত নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে হয়, কোথায় লুকাতে হবে, ব্ল্যাকআউটের সময় করণীয়, এবং জরুরি পরিস্থিতিতে পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কৌশল শেখানো। পাঞ্জাবের ফিরোজপুরে ইতিমধ্যেই রাতের বেলা একাধিক ব্ল্যাকআউট মহড়া সম্পন্ন হয়েছে, যেখানে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসন সমন্বয়ে শহরের বিদ্যুৎ বন্ধ করে মহড়া পরিচালনা করে।
সাধারণ জনগণ, শিক্ষার্থী, পুলিশ ও প্রশাসনের সদস্যদের জন্য এসব মহড়ায় অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পেহেলগাম হামলার পর নয়াদিল্লিতে সৃষ্টি হওয়া ক্ষোভ শুধু কূটনৈতিক স্তরে সীমাবদ্ধ থাকছে না—সামরিক প্রতিশোধের ইঙ্গিতও স্পষ্ট হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের একাধিক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক এই বার্তাই দিচ্ছে।
পাকিস্তানও পাল্টা ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে—সীমান্ত বন্ধ, ভিসা স্থগিত, এবং সামরিক প্রস্তুতি জোরদার করেছে তারা। কূটনৈতিক সম্পর্কের তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে।
এই টানটান স্নায়ুযুদ্ধের আবহে ভারতের জনগণ এখন বাস্তবিক যুদ্ধ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। যদিও সামরিক বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন—এই উত্তেজনা যুদ্ধের দিকে না গড়ালেই মঙ্গলজনক হবে, কারণ তা উভয় দেশের জন্যই ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনতে পারে।