বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বর্তমানে টানা বৃষ্টিপাত ও বন্যার কারণে প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। প্রতিবেশী দেশ ভারত, পাকিস্তান এবং দূরবর্তী যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসেও ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশে সোমবার রাত থেকে প্রায় সব বিভাগেই লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে। অনেক এলাকার নদ-নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছেছে। দেশের আবহাওয়া অনুযায়ী জুন থেকে সেপ্টেম্বর বন্যাপ্রবণ সময় হলেও জুলাই মাসে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়।
মৌসুমি বায়ু এই সময়ে বেশি সক্রিয় থাকে, যার ফলে ভারী বৃষ্টিপাত ঘটে এবং নদীগুলোর পানি ধারণক্ষমতার বাইরে চলে যায়, ফলে বন্যা দেখা দেয়। গত বছর আগস্ট মাসেও বাংলাদেশে নজিরবিহীন বন্যা হয়েছিল, যাতে অনেক জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং প্রাণহানিও ঘটে।
বর্তমানে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও আশপাশের অঞ্চলে একটি লঘুচাপ অবস্থান করছে, যা বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে মৌসুমি বায়ুকে সক্রিয় করেছে। এছাড়া রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত মৌসুমি বায়ুর বিস্তৃতি রয়েছে এবং এর একটি শাখা উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত পৌঁছেছে।
ফলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় হালকা থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ফেনীতে ২২২ মিলিমিটার, পটুয়াখালীতে ১১০ মিলিমিটার এবং মাইজদীকোর্টে ৬২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে।
গতকাল কক্সবাজারে সর্বোচ্চ ১৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রামের হাতিয়া, সন্দ্বীপ, ফেনী এবং খুলনার মোংলা, বরিশালের পটুয়াখালী ও খেপুপাড়ায়ও ১০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়ার সম্ভাবনা থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশালের বিভিন্ন স্থানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। চট্টগ্রামের পার্বত্য এলাকায় ভূমিধস এবং বড় শহরগুলোতে জলাবদ্ধতার ঝুঁকি রয়েছে।