শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পদ্মা সেতু প্রকল্পসংলগ্ন রক্ষা বাঁধে বর্ষা শুরুতেই ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। বুধবার (৯ জুলাই) দুপুর পর্যন্ত বাঁধের প্রায় ১৩০ মিটার অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে অন্তত ১৬টি বাড়িঘর ও ১০টি দোকান নদীতে ভেঙে পড়েছে, আরও বহু স্থাপনা রয়েছে হুমকির মুখে।
আলম খার কান্দি, উকিল উদ্দিন মুন্সি কান্দি ও ওছিম উদ্দিন মুন্সি কান্দির অন্তত ৬০০ পরিবার ভাঙনের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। অনেকেই বাড়িঘর নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন।
স্থানীয়দের মতে, গত বছরের নভেম্বরে মাঝিরঘাট এলাকায় প্রথম ধস দেখা দেয়, যা পরে ১০০ মিটার জুড়ে বিস্তৃত হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড পরে ২ কোটি ৮৭ লাখ টাকার সংস্কার প্রকল্প নেয়। তবে চলতি বছরের ঈদের দিন একই এলাকায় আবারও ভাঙন শুরু হয়, একদিনেই ২৫০ মিটার এলাকা নদীতে তলিয়ে যায়।
সর্বশেষ সোমবার বিকেলে মাত্র দুই ঘণ্টায় আরও ১৩০ মিটার অংশ বিলীন হয়। শহিদুল ইসলাম নামে এক দোকানি জানান, হঠাৎ ভাঙনের ফলে শ্রমিক সংকটে পড়ে পরিবারের সদস্যদের দিয়েই মালামাল সরাতে হয়েছে।
স্থানীয় সুমন হাওলাদার বলেন, নদীর প্রবাহের পরিবর্তনে ভাঙন আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। জরুরি পদক্ষেপ না নিলে বহু পরিবার নিঃস্ব হয়ে যাবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তারেক হাসান জানান, ভাঙন রোধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ঘটনাস্থলে এক হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে এবং ৯০ জন শ্রমিক কাজ করছেন।
জাজিরার ইউএনও কাবেরী রায় বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ২৬টি পরিবারকে নগদ অর্থ, টিন ও শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। পুনর্বাসন পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতুর পাশের এই গুরুত্বপূর্ণ বাঁধ রক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, আগেভাগে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় আজকের এই দুর্যোগ দেখা দিয়েছে। তারা দ্রুত, টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধান দাবি করছেন।