আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উত্তরবঙ্গের তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে এবং তা সতর্কসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিকেলে প্রকাশিত এক বিশেষ বন্যা সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, তিস্তা নদীর পানি বাড়ার ফলে রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম এবং লালমনিরহাট জেলার নদীসংলগ্ন নিচু এলাকাগুলো অস্থায়ীভাবে প্লাবিত হতে পারে। এতে ওই অঞ্চলের গ্রামীণ জনপদ, কৃষিজমি এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা কিছুটা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ফেনী জেলার সেলোনিয়া নদীতে পানি এখনও বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড আশা প্রকাশ করেছে, পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মুহুরি ও সেলোনিয়া নদীর পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করবে। এতে জেলার বর্তমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটতে পারে।
ফেনী জেলার অনেক নিম্নাঞ্চল ইতোমধ্যে পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে বহু মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। জেলার বিভিন্ন স্থানে ফসলের মাঠ, বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাটে পানি উঠে জনজীবনে ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি সম্ভাব্য আরও ক্ষয়ক্ষতি রোধে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তন ও মৌসুমি বৃষ্টির চক্রবৃদ্ধির কারণে নদীর পানি হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় দেশের অনেক অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি ঘটতে পারে। এজন্য প্রয়োজন সময়োপযোগী পরিকল্পনা এবং সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণ।
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, দেশের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি প্রবাহ ও আবহাওয়ার উপর নজরদারি অব্যাহত রয়েছে এবং প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক বার্তা নিয়মিতভাবে প্রদান করা হচ্ছে। পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে অবহিত করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
এই মুহূর্তে দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের মানুষকে সতর্ক থাকতে এবং স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে চলতে অনুরোধ জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।