জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র দ্রুত চূড়ান্ত করতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বিএনপির কাছে ঘোষণাপত্রের খসড়া আবারও পাঠানো হয়। দলটির সর্বোচ্চ ফোরাম স্থায়ী কমিটি মঙ্গলবার ও বুধবার রাতে গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠক করে খসড়াটি পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত মতামত দিয়েছে। কয়েকটি পরিবর্তন ও সংযোজন শেষে ঘোষণাপত্রে দলের অবস্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। এ মতামত দু-এক দিনের মধ্যেই সরকারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। এ কাজের দায়িত্বে আছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। নেতারা জানান, ছাত্রদের মতো বিএনপিও চায় দ্রুত এই ঘোষণাপত্র প্রকাশ হোক, এবং সে লক্ষ্যে আন্তরিকভাবে বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।
জানা যায়, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ঘোষণাপত্র প্রকাশের পরিকল্পনা করেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। তবে তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা প্রশ্ন ওঠে। তখন সরকার এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট নয় বলে জানালেও, পরদিন রাতে প্রেস ব্রিফিংয়ে সরকার ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগে যুক্ত থাকার কথা জানায়।
পরবর্তী সময়ে ১৬ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেন। তবে ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করার কার্যক্রম ধীরগতিতে চলায় সমালোচনার মুখে পড়ে সরকার। সম্প্রতি আন্দোলনকারী পক্ষ সরকারকে ৩ আগস্টের মধ্যে ঘোষণাপত্র প্রকাশের সময়সীমা বেঁধে দেয়।
ঘোষণাপত্রের খসড়ায় উল্লেখ করা হয়—এই ভূখণ্ডে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, পাকিস্তান আমলে শোষণ, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের প্রেক্ষাপট। এতে শেখ হাসিনার পদত্যাগ, ভারতে পলায়ন এবং আওয়ামী সরকারের ‘গণহত্যা ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটের’ বিচার চাওয়ার কথাও স্থান পেয়েছে।
সাম্প্রতিক বৈঠকে বিএনপি নেতারা আরও আলোচনা করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক বাংলাদেশি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ৩৫% শুল্ক আরোপের বিষয়ে। দলটি এ সিদ্ধান্তে উদ্বেগ জানিয়ে মার্কিন সরকারের কাছে পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানায়।