বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অনলাইন প্রস্তুতির একটি কোচিং সেন্টারের লাইভ ক্লাসে শিক্ষক-শিক্ষিকার আপত্তিকর আচরণের অভিযোগে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন এক অভিভাবক। গত বুধবার (৯ জুলাই) রাজধানীর ভাটারা থানায় এ অভিযোগ জমা দেন আশরাফ বিজয় নামের ওই ব্যক্তি।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ৮ জুলাই রাত ১২টার দিকে একটি লাইভ ক্লাস চলাকালীন সময় এক পুরুষ ও এক নারী শিক্ষক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অশালীন আচরণে লিপ্ত হন, যা সামাজিক ও শিক্ষাগত মূল্যবোধের পরিপন্থী। ঘটনাটির ভিডিও সংরক্ষিত রয়েছে এবং তা ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড ছাত্রছাত্রীদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করছে এবং শিক্ষকতার মহান পেশাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে বলে অভিযোগকারীর ভাষ্য।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে আশরাফ বিজয় বলেন, “আমি একজন অভিভাবক হিসেবে দায়বদ্ধতা থেকে থানায় অভিযোগ করেছি। আমি চাই, এই দুই শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট কোচিং প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি পাওয়া যায় অন্বেষণ কোচিং সেন্টারের ইউটিউব চ্যানেল থেকে। এতে দেখা যায়, লাইভ ক্লাস চলাকালে একজন নারী ও একজন পুরুষ শিক্ষক চুম্বনের মতো দৃশ্যে লিপ্ত হন। ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসার পর অভিভাবক ও শিক্ষার্থী মহলে ব্যাপক ক্ষোভ ও সমালোচনার জন্ম দেয়।
ভিডিওটির সত্যতা স্বীকার করে প্রতিষ্ঠানটির দুই মালিক, আকাশ ও অর্ক, এক বিবৃতিতে বলেন, “আমাদের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের দুই শিক্ষক এই অনভিপ্রেত ঘটনায় জড়িত ছিলেন। আমরা অত্যন্ত লজ্জিত ও দুঃখিত। আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাক্সেস আমরা শিক্ষকদের হাতে দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা যে এমন অশোভন আচরণ করবেন, তা আমরা কল্পনাও করিনি। আমরা সকল শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাইছি।”
এ বিষয়ে ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম জানান, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি এবং বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঘটনাটি শুধু একটি অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণের প্রশ্নেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থায় নৈতিকতার প্রশ্নও তুলে ধরেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।