নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
“প্রয়োজনে জীবন দেব, তবু দেশের এক ইঞ্চি মাটিও ছাড়ব না”—এমন দৃপ্ত শপথে উদ্বুদ্ধ হয়ে সীমান্ত রক্ষার অঙ্গীকার করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ১০৩তম রিক্রুট ব্যাচের নবীন সৈনিকরা। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় অবস্থিত বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজের (বিজিটিসিএন্ডসি) বীর উত্তম মজিবুর রহমান প্যারেড গ্রাউন্ডে আয়োজিত কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন বিজিবি মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মো. আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।
সকাল সাড়ে ৯টায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সশস্ত্র সালাম গ্রহণের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর নবীন সৈনিকদের শপথ গ্রহণ ও সমাপনী কুচকাওয়াজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। এ সময় বিজিবি মহাপরিচালক নবীনদের উদ্দেশে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন এবং তাদের পেশাগত জীবনের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে বিজিবি দেশব্যাপী ৪ হাজার ৪২৭ কিলোমিটার সুদীর্ঘ সীমান্ত রক্ষা, চোরাচালান প্রতিরোধ, নারী ও শিশু পাচার রোধ এবং যেকোনো আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। শুধু তাই নয়, দেশের অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায়ও এই বাহিনী সরকারকে নির্ভরযোগ্য সহায়তা প্রদান করে আসছে।”
নারী সৈনিকদের অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “মহান মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অবদান ছিল অনন্য। আজকের নারী সৈনিকরা বিজিবির গৌরবময় অভিযাত্রায় নতুন মাত্রা যোগ করবে। তাদের সততা, দক্ষতা ও নিষ্ঠাই বাহিনীকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।”
শৃঙ্খলা ও পেশাগত আচরণের ওপর জোর দিয়ে ডিজি বলেন, “শৃঙ্খলাই সৈনিক জীবনের অলংকার। সীমান্তে দায়িত্ব পালনকালে নবীনদের সততা, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বই বাহিনীর গৌরব অক্ষুণ্ণ রাখবে।”
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ১০৩তম রিক্রুট ব্যাচের মৌলিক প্রশিক্ষণ শুরু হয় গত ২৬ জানুয়ারি। ছয় মাসব্যাপী কঠোর প্রশিক্ষণ শেষে এদিন ৬৫৮ জন পুরুষ ও ৩৬ জন নারী—মোট ৬৯৪ জন রিক্রুট আনুষ্ঠানিকভাবে সৈনিক জীবনে প্রবেশ করে।
বিজিবির এ অনন্য অনুষ্ঠানটি ছিল জাতীয় দায়িত্ববোধ, দেশপ্রেম ও পেশাগত শৃঙ্খলার এক জীবন্ত উদাহরণ। নবীন সৈনিকদের দৃঢ় পদক্ষেপে আজ আরও শক্তিশালী হল দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী।