খুলনার দৌলতপুরে যুবদলের বহিষ্কৃত নেতা মাহবুবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের রহস্য এখনো পুরোপুরি উদ্ঘাটন হয়নি। একাধিক পুলিশ টিম মাঠে কাজ করলেও ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। পুলিশ বলছে, মূলত এলাকার আধিপত্য বিস্তার ও মাদক কারবারকে কেন্দ্র করেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মাহবুবের ওপর তিনজন অস্ত্রধারী হামলা চালায়। তাদের মধ্যে একজন হেলমেট পরা থাকলেও অন্যদের মুখ খোলা ছিল। তারা মহেশ্বরপাশা পশ্চিম এলাকা দিয়ে ঢুকে প্রায় ৩০ মিনিটের মধ্যে হত্যাকাণ্ড শেষ করে তেলিগাতি দিয়ে এলাকা ত্যাগ করে।
পুলিশের দাবি, হত্যার আগে মাহবুবকে সাত রাউন্ড গুলি করা হয় এবং মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পরও তার পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়, যা এই হত্যাকাণ্ডকে আরও নির্মম করে তোলে।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার তাজুল ইসলাম বলেন, “আধিপত্য বিস্তার ও ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বসহ মাদক সংশ্লিষ্টতাও এখানে থাকতে পারে।” তিনি আরও জানান, পাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে, আরও ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।
মাহবুবের বাবা আব্দুল করিম মোল্লা অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন। তদন্তে পুলিশ স্থানীয় মাদক চক্র, রাজনৈতিক বিরোধ, চরমপন্থী সংযোগ এবং কুয়েটের টেন্ডার দখল ইত্যাদি বিষয় মাথায় রেখে তদন্ত চালাচ্ছে।
মাহবুবের স্ত্রী এরিনা সুলতানা জানান, বিএনপির সুধী সমাবেশে হামলার একটি মামলার কারণে মাহবুবকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। মামলায় স্থানীয় এক ব্যবসায়ী সাহেদকে আসামি করায় উত্তেজনা বাড়ে।
স্থানীয়রা বলছে, সাহেদ ও মাহবুবের মধ্যে বাড়ি দখল নিয়ে বিরোধ ছিল। এলাকায় মাদক ব্যবসা, চরমপন্থি সম্পৃক্ততা ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারে মাহবুব ছিলেন আলোচিত।
মাহবুবের এক আত্মীয় জানান, তিনি যে গাড়িটি ব্যবহার করতেন তা স্থানীয় যুবলীগ নেতা জাহিদের কাছ থেকে বন্ধক রাখা হয়েছিল।
এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, নিরীহ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়, সেদিকে তারা সতর্ক। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।
নিহত মাহবুবুর রহমানের পরিবারে এখন চলছে শোকের মাতম। তার দুই শিশুকন্যা ও স্ত্রী শোকাহত অবস্থায় রয়েছেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
Top of Form
Bottom of Form