মোংলা-খুলনা মহাসড়কের করুণ অবস্থার কারণে এই রুটে যাতায়াত এখন এক আতঙ্কের নাম। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় সড়কের পিচ উঠে গিয়ে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে মোংলা বন্দর থেকে রামপাল পাওয়ার প্লান্ট পর্যন্ত অংশে চলাচল মানেই জীবনের ঝুঁকি নেওয়া।
রাতের বেলায় গর্ত দেখা না যাওয়ায় সিএনজি, মোটরসাইকেল ও পিকআপসহ ছোট যানবাহন প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। এমনকি পণ্যবাহী ট্রাকও উল্টে যাচ্ছে। প্রায় ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মহাসড়কটি খুলনার সঙ্গে মোংলার সংযোগের একমাত্র রাস্তা। মোংলা বন্দরের আমদানি-রপ্তানি পণ্য বহনকারী শত শত ট্রাক প্রতিদিন এই রাস্তা ব্যবহার করে। কিন্তু সড়কের করুণ অবস্থার কারণে প্রায়ই যানবাহন আটকে গিয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে, ফলে সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তির পাশাপাশি ব্যবসায়ীদেরও গুনতে হচ্ছে ক্ষতি।
স্থানীয় পথচারী আব্দুল আলিম বলেন,
“মোংলা থেকে খুলনায় যেতে এখন সময় লাগছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। শুধু ভোগান্তিই নয়, দুর্ঘটনার আশঙ্কায় রাস্তায় নামতেও ভয় লাগে।”
ট্রাকচালক সোহেল রানা বলেন,
“বন্দর থেকে পণ্য নিয়ে খুলনায় যেতে গেলে মনে হয়, ট্রাক ভেঙে পড়বে। প্রতিদিন কোনো না কোনো গাড়ি গর্তে আটকে যায়। এতে ব্যবসাও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।”
বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উদয় শংকর বিশ্বাস জানান,
“এই সড়ক দিয়ে হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে। আমরা বহুবার সংস্কারের দাবি জানিয়েছি, কিন্তু এখনো কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।”
মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আক্তার সুমি জানান,
“বিষয়টি আমি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানিয়েছি। খুব শিগগিরই সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মোংলা বন্দরের হারবার ও মেরিন বিভাগের কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন,
“মোংলা থেকে দিগরাজ পর্যন্ত সড়ক আমাদের আওতায়। অতিবৃষ্টির কারণে সড়কের অবস্থা খারাপ হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে সংস্কারের জন্য অর্ডার দিয়েছি, দ্রুতই কাজ শুরু হবে।”
এদিকে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম জানান,
“কাটাখালী থেকে দিগরাজ পর্যন্ত সড়ক আমাদের অধীন। কিছু এলাকায় সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলেই কাজ শুরু করা হবে।”
বর্তমান অবস্থায়, মোংলা-খুলনা মহাসড়কের দ্রুত সংস্কার ছাড়া সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগের শেষ নেই।