সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে গত ১৪ জুলাই (রোববার) শিক্ষার্থীরা পুলিশের বাধা অতিক্রম করে বঙ্গভবনে পৌঁছে রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি জমা দেন। স্মারকলিপিতে তারা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানান, দায়ের করা মামলাগুলো প্রত্যাহারের দাবি তোলেন এবং সব গ্রেডে কোটা সংস্কারের একদফা বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
একই দিনে দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি দেন। এই কর্মসূচির ঘোষণা এসেছিল আগের দিন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে।
রাজধানীতে পদযাত্রার জন্য সকাল ১১টা থেকে শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হন। বেলা ১২টার দিকে পদযাত্রা শুরু হয়ে শাহবাগ, মৎস্য ভবন হয়ে হাইকোর্ট পর্যন্ত পৌঁছালে পুলিশ বাধা দেয়। এরপর শিক্ষার্থীরা গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত যান এবং সেখানে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে বঙ্গভবনের দিকে অগ্রসর হন।
বিকেল ২টার দিকে আন্দোলনকারীদের ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বঙ্গভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিবের কাছে স্মারকলিপি হস্তান্তর করে।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালের আন্দোলনের পর নবম থেকে ত্রয়োদশ গ্রেডে কোটা বিলুপ্ত হলেও শিক্ষার্থীদের মূল দাবি ছিল সব গ্রেডে কোটা সংস্কার। তারা চায়—সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য সর্বোচ্চ ৫% সংরক্ষণ রেখে সংসদে আইন করে কোটা পদ্ধতি সংস্কার করা হোক।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংসদে অধিবেশন ডেকে দাবির বাস্তবায়ন দেখতে চাই। এছাড়া শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা অজ্ঞাতনামা মামলা প্রত্যাহারের জন্য অতিরিক্ত ২৪ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছে, না হলে আন্দোলন আরও কঠোর হবে।
এই দিন চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, রংপুর, পাবনা, কুষ্টিয়া, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন জেলার বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির উদ্দেশে স্মারকলিপি দেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পদযাত্রা, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ হয়।
তবে এই দিনই হাইকোর্ট সরকারি চাকরিতে কোটা বহালের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে। এ অবস্থায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল মন্তব্য করেন, “শিক্ষার্থীরা না বুঝেই আন্দোলনে নেমেছে, উসকানিদাতারাও রয়েছে। তদন্ত চলবে।”