“জুলাই আমাদের সবার, কেউ এটি বিক্রি করতে পারবে না”—এমন দৃঢ় প্রত্যয়ে মুখরিত ছিল আজকের জুলাই উইমেন্স ডে উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত স্মরণানুষ্ঠান। বক্তারা বলেন, যারা ‘জুলাই বিপ্লব’ স্বীকার করে না, তারা আমাদের কেউ নয়।
১৪ জুলাই সন্ধ্যায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি শুরু হয় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রযোজিত একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে মূল পর্ব শুরু হয়। এরপর দেখানো হয় দীপক কুমার গোস্বামীর চলচ্চিত্র ‘স্পিকিং’ ও ‘জুলাই বিষাদ সিন্ধু’।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টা ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। তাদের মধ্যে ছিলেন আইন, সমাজকল্যাণ, মৎস্য ও সংস্কৃতি উপদেষ্টারা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমেদ খান, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম প্রমুখ।
জুলাই বিপ্লবী সংগীতশিল্পী ও যোদ্ধা ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান পরিবেশন করেন ‘এই মেয়ে শোন’, ‘আমি জুলাইয়ের গল্প বলবো’, ও ‘আমার নাম প্যালেস্টাইন’-সহ আরও জনপ্রিয় গান।
শহীদ নাইমা সুলতানার মা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সায়মা ও উমামা, আবরার ফায়াজ, স্বর্ণা রিয়াসহ অনেকেই স্মৃতিচারণ করেন ৯০’র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নারীদের অংশগ্রহণ নিয়ে। বক্তারা বলেন, আমরা সেই স্বাধীন বাংলাদেশ চাই যেখানে নারী-পুরুষের সমান অধিকার থাকবে, কেউ নিপীড়নের শিকার হবে না।
তারা স্পষ্টভাবে জানান, নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে সরকারকে শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্যথায় জুলাই যোদ্ধারা আবারও রাস্তায় নামবে এবং প্রতিবাদ জানাবে। “আমরা আর স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আমলে ফিরে যেতে চাই না”—এই বক্তব্যও উঠে আসে বিভিন্ন বক্তার কণ্ঠে।
সঙ্গীত পরিবেশন করে ব্যান্ডদল ‘ইলা লা লা’, ‘এফ মাইনর’ ও শিল্পী এলিটা করিম। পরিবেশিত গানের মধ্যে ছিল—‘আলো আসবেই’, ‘মুক্তি’, ‘চলো ভুলে যাই’, ‘আমি বাংলায় গান গাই’, ‘বাংলাদেশ’ ইত্যাদি।
অনুষ্ঠানজুড়ে ‘স্লোগান গার্ল’দের স্লোগান, প্রতিবাদ ও প্রত্যয়ের ধ্বনি দর্শকদের মধ্যে আলোড়ন তোলে। সবশেষে শহীদ আবরার ফাহাদকে নিয়ে তৈরি ডকুমেন্টারি প্রদর্শনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের পর্দা নামে।