জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পূর্বঘোষিত সমাবেশকে কেন্দ্র করে বুধবার (১৬ জুলাই) দিনভর উত্তেজনা ও সহিংসতায় উত্তপ্ত ছিল গোপালগঞ্জ শহর। শহরের কেন্দ্রস্থলে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, গুলিবর্ষণ ও ব্যাপক ভাঙচুরের পর সন্ধ্যার পর কিছুটা পরিস্থিতি শান্ত হলেও, পুরো শহরে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক।
রাত ৮টা থেকে শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে। এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
শহরের প্রধান সড়কজুড়ে দেখা যাচ্ছে ইট-পাটকেল, ধ্বংসপ্রাপ্ত তোরণ গেট, ছেঁড়া ব্যানার ও ফেস্টুন। সমাবেশস্থলে ভাঙা চেয়ার ও সাউন্ড সিস্টেমের ভগ্নাবশেষ ছড়িয়ে রয়েছে। শহরের বিভিন্ন প্রবেশপথে গাছ কেটে তৈরি করা ব্যারিকেডের চিহ্নও এখনও দৃশ্যমান। পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, আদালত চত্বর ও ভাটিয়াপাড়া মোড় এলাকাগুলোতে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা সবচেয়ে বেশি।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সেনাবাহিনী ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। ডিসি অফিস, জেলা কারাগার, ও শহরের মোড়ে মোড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী টহলে রয়েছে। শহরের দোকানপাট বন্ধ, রাস্তাঘাট ফাঁকা এবং সাধারণ মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।
দুপুর থেকে শুরু হওয়া সহিংসতায় এনসিপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাও জড়ায়। চলে ইট-পাটকেল ও ককটেল নিক্ষেপ এবং গুলিবিনিময়। এতে অন্তত ৪ জন নিহত হন ঘটনাস্থলেই এবং আহত হন ৫০ জনের বেশি, যাদের মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন। আহতদের অনেকেই এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত শহরে যৌথ বাহিনী অবস্থান করবে। এ ঘটনায় ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং আরও বেশ কয়েকজনকে শনাক্ত করে আটকের প্রক্রিয়া চলছে।