২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত তারেক রহমান এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামির খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের শুনানি শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির একটি আপিল বেঞ্চে এই শুনানি শুরু হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে পেপারবুক থেকে পাঠ করছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মাসুদ। এ সময় বিএনপির পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন এবং অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান রায়হান বিশ্বাস।
গত ১৫ জুলাই আপিল বিভাগের পক্ষ থেকে আজকের দিন শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়। এর আগে, ১ জুন হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষকে আপিল করার অনুমতি দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ।
উল্লেখ্য, গত ১২ জানুয়ারি হাইকোর্ট একটি আলোচিত রায়ে বিচারিক আদালতের দেয়া সাজা বাতিল করে সকল আসামিকে খালাস দেন। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের বেঞ্চ উল্লেখ করেন, একুশে আগস্ট হামলা মামলার বিচার আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে পরিচালিত হয়েছে এবং চার্জশিট ছিল গ্রহণযোগ্যতার ঘাটতিপূর্ণ।
২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর বিচারিক আদালত এ মামলায় ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং আরও ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন। ওই রায় হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স আকারে ২৭ নভেম্বর আসে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের তালিকায় ছিলেন:
লুৎফুজ্জামান বাবর, আবদুস সালাম পিন্টু, মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার (অব.) আবদুর রহিম, হানিফ পরিবহনের মালিক হানিফ, জঙ্গি নেতা মাওলানা তাজউদ্দীন, শেখ আবদুস সালাম, শেখ ফরিদ, আবু সাইদ, আবু জান্দাল, আবু তাহের, মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক, মহিবুল্লাহ, আবুল কালাম আজাদ, জাহাঙ্গীর আলম, হোসাইন আহমেদ তামিম, রফিকুল ইসলাম ও মো. উজ্জ্বল।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্তদের মধ্যে ছিলেন:
শাহাদাৎ উল্লাহ জুয়েল, আবদুর রউফ, আবু হোমাইরা, মাওলানা সাব্বির আহমদ, আরিফ হাসান, ইয়াহিয়া, আবু বকর, আরিফুল ইসলাম, মহিবুল মোত্তাকিন (পলাতক), আনিসুল মুরছালিন (পলাতক), মো. খলিল (পলাতক), জাহাঙ্গীর আলম বদর (পলাতক), মো. ইকবাল (পলাতক), লিটন (পলাতক), তারেক রহমান (পলাতক), হারিছ চৌধুরী (পলাতক), কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ (পলাতক), মুফতি শফিকুর রহমান (পলাতক), মুফতি আবদুল হাই (পলাতক) ও রাতুল আহম্মেদ বাবু (পলাতক)।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের একটি সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এতে মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অসংখ্য নেতা-কর্মী গুরুতর আহত হন, যাদের অনেকে আজও শরীরে স্প্লিন্টার নিয়ে যন্ত্রণা সহ্য করে চলেছেন, কেউ কেউ পঙ্গু জীবনযাপন করছেন।