বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনায় নিহত পাইলট তৌকির ইসলাম সাগরের মৃত্যুতে শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার চককীর্তি ইউনিয়নের কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রাম। এলাকার মানুষের একটাই দাবি— এই গর্বিত সন্তান যেন নিজের জন্মস্থানেই দাফন হন, যাতে তারা শেষবারের মতো তার মুখ দেখতে পারেন এবং প্রিয়জনকে জানাজায় বিদায় জানাতে পারেন।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সরেজমিনে কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, তৌকিরের মৃত্যুতে বিভিন্ন বয়স ও পেশার মানুষ শোকাহত। স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কাশেম বলেন, “সাগরের পরিবার বরাবরই দানশীল ও মানবিক। তৌকিরও ছিলেন খুবই ভদ্র, নিরহঙ্কার ও মানুষের পাশে দাঁড়ানো একজন প্রকৃত মানুষ। তিনি রাজশাহীতে বড় হলেও কখনো তার গ্রামের মানুষকে ভুলে যাননি। চিকিৎসার প্রয়োজনে কেউ সেখানে গেলে তিনি সব সময় পাশে থেকেছেন।”
গ্রামের এক শিশু, সাদ আহমেদ, কাঁদতে কাঁদতে বলে, “সাগর কাক্কু আমাদের লেখাপড়ার খবর নিতেন, আদর করতেন, খাতা-কলম কিনে দিতেন। আমি চাই উনি এখানে দাফন হোন, যেন তাকে একবার দেখতে পারি।”
প্রতিবেশী আলাউদ্দিন, আবদুল লতিফ ও আলহাজ শান্তিজুল জানান, “সাগরের পরিবার ধর্মভীরু এবং সমাজসেবামূলক কাজে নিয়োজিত। তার মা-বাবা স্থানীয় মসজিদের জন্য জমি দিয়েছেন, মসজিদ নির্মাণ করেছেন। যদিও তারা এখন রাজশাহী ও ঢাকায় বসবাস করেন, তবু এই গ্রামের সঙ্গে তাদের আত্মিক বন্ধন অটুট রয়েছে। আমরা চাই, এই গর্বিত সন্তানের কবর হোক তার পৈতৃক ভিটাতেই।”
জানা গেছে, পাইলট তৌকির ইসলাম সাগরের পরিবারের জমিজমা ও বসতবাড়ি এখনো কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রামেই রয়েছে, যদিও সেখানে বর্তমানে কেউ স্থায়ীভাবে বসবাস করেন না।
উল্লেখ্য, সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়িতে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি এফ-৭ বিজেআই প্রশিক্ষণ বিমান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয়। এই দুর্ঘটনায় পাইলট তৌকিরসহ বহু শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ আহত হন, এবং প্রাণ হারান অনেকে।