ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত হয়েছেন কলেজটির কোঅর্ডিনেটর মাহরিন চৌধুরী (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শিশুশিক্ষার্থীদের জীবন রক্ষায় ঝুঁকি নিয়ে আগুনের মুখে ঝাঁপিয়ে পড়া এই শিক্ষিকা শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছে হার মানেন।
সোমবার (২১ জুলাই) রাতে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শাওন বিন রহমান। এরপর মাহরিনের ভাই মুনাফ মুজিব চৌধুরী ফেসবুক পোস্টে বোনের মৃত্যুসংবাদ দিয়ে লেখেন, “মাহরিন আপু আর আমাদের মাঝে নেই। তিনি আমার বড় বোন, মায়ের মতো করে বড় করেছেন আমাকে।”
ওইদিন দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে মাইলস্টোন ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি এফটি-৭ বিজিআই মডেলের প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয় এবং সঙ্গে সঙ্গেই আগুন ধরে যায়। প্রতিদিনের মতোই মাহরিন চৌধুরী (৪২) তখন শিশুশিক্ষার্থীদের হাতে ধরে গেট পার করাচ্ছিলেন। আগুন ছড়িয়ে পড়লেও নিজে বের হওয়ার আগে যতজন ছাত্র-ছাত্রীকে পারা যায় নিরাপদে বের করে আনার প্রাণপণ চেষ্টা চালান তিনি। এ সময় তিনি গুরুতর দগ্ধ হন।
মুনাফ চৌধুরী জানান, “বিধ্বস্ত হওয়ার পর মাহরিন আপু প্রথমে নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করেননি। বরং শিশুদের আগলে বের করে আনার চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি নিজে পুরোপুরি দগ্ধ হন।”
তিনি আরও লেখেন, “আপনারা দয়া করে আমার বোনের জন্য দোয়া করবেন। তিনি তার দুই সন্তানকে রেখে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। হাসপাতাল থেকে আনুষ্ঠানিক ছাড়পত্র পাওয়ার পর বাকি বিষয়গুলো জানাব।”
দুর্ঘটনার পরপরই তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানান, তার শরীরের শতভাগ পুড়ে গিয়েছিল। আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে শেষমেশ সোমবার রাতে তার মৃত্যু হয়।