আগুনে পোড়া বা বার্ন ইনজুরি একটি ভয়াবহ ও জীবনঝুঁকিপূর্ণ দুর্ঘটনা, যা শারীরিক এবং মানসিক উভয়ভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত করে। এই ধরনের রোগীর দ্রুত ও সঠিক যত্ন না পেলে সংক্রমণ, অঙ্গহানি এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে। তাই আগুনে পোড়া রোগীর যত্নে সচেতনতা ও সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।
প্রথমেই, দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে হয়। পোড়া স্থানে দ্রুত ঠান্ডা পানি ঢালতে হবে ১৫–২০ মিনিট ধরে। এতে ব্যথা কমে এবং ত্বকের ক্ষতি কিছুটা হলেও হ্রাস পায়। তবে কোনো অবস্থাতেই পুড়ে যাওয়া জায়গায় বরফ, তেল, পেস্ট বা পাউডার ব্যবহার করা উচিত নয়। আক্রান্ত অংশটি পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত কাপড় দিয়ে ঢেকে দ্রুত রোগীকে চিকিৎসাকেন্দ্রে নিতে হবে।
হাসপাতালে রোগীর বার্নের মাত্রা অনুযায়ী চিকিৎসা নির্ধারণ করা হয়। হালকা পোড়ার ক্ষেত্রে ওষুধ ও ড্রেসিংই যথেষ্ট, তবে তীব্র বা গভীর পোড়ায় প্রয়োজন হতে পারে স্যালাইন, অ্যান্টিবায়োটিক, অক্সিজেন থেরাপি বা এমনকি সার্জারি। ইনফেকশন বার্ন রোগীদের প্রধান শত্রু। তাই প্রতিদিন ড্রেসিং পরিবর্তনের সময় জীবাণুমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।
দীর্ঘমেয়াদে রোগীদের ফিজিওথেরাপি, চর্ম পরিচর্যা ও মানসিক সহায়তা প্রয়োজন হয়। অনেক সময় দগ্ধ স্থানে চামড়া সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে, তাই স্কার ম্যানেজমেন্ট ও কসমেটিক সার্জারিরও দরকার পড়ে।
সার্বিকভাবে, আগুনে পোড়া রোগীর সেবা একটি টিমওয়ার্কের বিষয়। এতে চিকিৎসক, নার্স, পরিবার এবং সমাজের সবার দায়িত্বশীল ভূমিকা অপরিহার্য। যত্নবান ও মানবিক আচরণই রোগীর সুস্থতার পথে সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠে।