রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের ২৫০ শয্যার নতুন ভবনের লিফট স্থাপনের সময় একদল চাঁদাবাজ অর্থ দাবি করলে নির্মাণকাজে বিঘ্ন ঘটে। নিরাপত্তার কারণে ঠিকাদার ও গণপূর্ত বিভাগ মামলা করতে রাজি না হওয়ায় পুলিশ নিজেই বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
এ ঘটনার পর, গত সোমবার (২১ জুলাই) অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টে “চাঁদা না দেওয়ায় রাজবাড়ীতে হাসপাতালের লিফটের কাজ বন্ধ” শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে জেলায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম নেয় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিষয়টি ভাইরাল হয়।
প্রকাশিত প্রতিবেদনটি নজরে আসার পর প্রশাসন তৎপর হয়। ওইদিন বিকেলে রাজবাড়ী সদর থানায় পুলিশের পক্ষ থেকে একটি মামলা রুজু করা হয়। মামলার বাদী হিসেবে ছিলেন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সোহেবুর রহমান।
প্রাপ্ত এজাহার অনুযায়ী, ২১ জুলাই সকাল ১১টার দিকে বড়পুল মোড়ে ডিউটিতে থাকা অবস্থায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার ফোন পেয়ে এসআই সোহেবুর ঘটনাস্থলে যান। সেখানে তিনি লিফট টেকনিশিয়ান মো. মোশারফ হোসেন ও ইঞ্জিনিয়ার মো. ফারুক হোসেনসহ সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তারা জানান, আপাতত কোনো সমস্যা না থাকলেও গত ১৯ জানুয়ারি দুপুরে ৮-১০ জন ব্যক্তি নির্মাণাধীন ভবনে প্রবেশ করে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এবং মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়।
ঘটনার পর নির্মাণ কর্তৃপক্ষকে মামলা করতে বলা হলে তারা নিরাপত্তার অভাবের কথা বলে মামলা করতে রাজি হননি। ফলে পুলিশ নিজ উদ্যোগে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৪৩/৪৪৮/৩৮৫/৫০৬ ধারায় মামলা দায়ের করে।
এ বিষয়ে ওসি মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান জানান, ঠিকাদার বা গণপূর্ত বিভাগ মামলা না করায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে এবং চাঁদাবাজদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত চলছে।
এর আগে, ২০ জুলাই জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উন্নয়ন সমন্বয় সভায় হাসপাতালের নির্মাণ কাজ নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম জানান, চাঁদা চাওয়ার কারণে লিফট স্থাপনে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে এবং কর্মীরা আতঙ্কে রয়েছেন। সভায় জেলা প্রশাসকসহ অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।