যারা নক্ষত্রের আকাশ ভালোবাসেন বা রাতের আকাশে চোখ রেখে স্বপ্ন খোঁজেন— তাদের জন্য ২৮ জুলাই হতে যাচ্ছে গ্রীষ্মের সবচেয়ে আকর্ষণীয় রাত। এই রাতে একসঙ্গে দেখা যাবে উজ্জ্বল চাঁদ, মঙ্গলের লালাভ উপস্থিতি এবং ডেল্টা অ্যাকুয়ারিড উল্কাবৃষ্টির মনোমুগ্ধকর ঝলকানি। সবচেয়ে বড় কথা, এই দৃশ্য উপভোগ করতে আপনার কোনো টেলিস্কোপ লাগবে না— খালি চোখেই দেখা সম্ভব হবে এই মহাজাগতিক আয়োজন।
সন্ধ্যার পর আকাশে চাঁদ ও মঙ্গল গ্রহ থাকবে একেবারে কাছাকাছি অবস্থানে। বছরে মাত্র কয়েকবারই এমন অবস্থান দেখা যায়, যেখানে মঙ্গলকে চাঁদের পাশে উজ্জ্বল লাল বিন্দুর মতো দেখা যাবে— সহজেই চেনা যায় এমন এক দৃশ্য। যদিও তারা বাস্তবে কোটি কোটি মাইল দূরে, তবে পৃথিবী থেকে দেখা যাবে তাদের এক অসাধারণ কাছাকাছি উপস্থিতি।
চাঁদ থাকবে ‘ওয়াক্সিং গিবাস’ পর্যায়ে— অর্থাৎ প্রায় পূর্ণ অবস্থায়। এর ফলে মঙ্গলের লালচে আভা আরও জ্বলজ্বল করবে।
এই রাতের আরও এক বিশেষত্ব হলো ডেল্টা অ্যাকুয়ারিড উল্কাবৃষ্টি, যার চূড়ান্ত সময় পড়বে ২৮ জুলাই রাত থেকে ২৯ জুলাই ভোর পর্যন্ত। প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ২০টি উল্কা দেখা যেতে পারে পরিষ্কার আকাশে। যদিও পূর্ণচাঁদের আলো কিছুটা উজ্জ্বলতা কমিয়ে দিতে পারে, উল্কাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে আকাশে থেকে যায়, ফলে সেগুলো দেখা সম্ভব— বিশেষ করে ভোরের আগে যখন চাঁদ অস্তমিত হয়।
কেন ২৮ জুলাই হবে ভিন্নরকম:
একসঙ্গে দেখা যাবে গ্রহ, চাঁদ ও উল্কা – আকাশ যেন এক মহাজাগতিক প্রদর্শনীতে পরিণত হবে।
শহর থেকেও চাঁদ ও মঙ্গল স্পষ্ট দেখা যাবে, তবে উল্কাবৃষ্টি দেখতে হলে অন্ধকার জায়গা বেছে নেওয়াই ভালো।
গ্রীষ্মের আবহাওয়া থাকবে আরামদায়ক – রাতের আকাশ দেখার জন্য আদর্শ সময়।
কীভাবে এই রাত উপভোগ করবেন:
- আলোকদূষণমুক্ত জায়গায় যান – শহরের বাইরে গেলে উল্কাবৃষ্টি আরও স্পষ্টভাবে দেখা যাবে।
- দক্ষিণ-পূর্ব আকাশের দিকে তাকান – সন্ধ্যার পর সেদিকে দেখা যাবে চাঁদ ও মঙ্গল।
- রাত জেগে থাকুন – উল্কাবৃষ্টি সবচেয়ে ভালো দেখা যাবে রাত ১২টার পর।
- চাদর বা রিক্লাইনিং চেয়ার সঙ্গে নিন – দীর্ঘ সময় আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে আরাম দরকার।
- চোখকে অন্ধকারে অভ্যস্ত হতে দিন – ফোন বা উজ্জ্বল আলো এড়িয়ে অন্তত ২০ মিনিট চোখকে প্রস্তুত করুন।
এই রাতের জন্য কোনো বিশেষ যন্ত্র দরকার নেই— শুধু আপনি, আপনার চোখ আর কিছুটা ধৈর্যই যথেষ্ট। ছবি তুলুন, তারা দেখে প্রার্থনা করুন অথবা নীরবে বসে মহাবিশ্বের নিঃশব্দ সৌন্দর্য উপভোগ করুন।
২৮ জুলাই যেন ভুলে না যান—এই রাত মহাবিশ্ব আপনাকে একটি দুর্লভ সৌন্দর্যের সাক্ষী হতে ডাকছে।