২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলায় শুরু হয় মানবিক বিপর্যয়। প্রতিদিনই ফিলিস্তিনি নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরদের নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। ত্রাণ প্রবেশেও বাধা দেওয়া হচ্ছে, ফলে খাদ্যাভাবে মৃত্যু হচ্ছে অসংখ্য মানুষের। অথচ বিশ্বজুড়ে মানবাধিকারের কথা বলা প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলো নিরব দর্শকের ভূমিকায়। তারা যেন ইচ্ছা করেই চোখ বুজে রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে অনেকেই জানতে চাচ্ছেন, বিশ্বে কতটি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে? তারা কী করছে? কেন তারা এখনও নীরব?
ভারতের এনডিটিভি বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে জানায়, জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য দেশের মধ্যে অন্তত ১৪২টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। সম্প্রতি ফ্রান্সকেও এ তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে।
২০২৩ সালের পর থেকে আরও অন্তত ১০টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। ২০২৪ সালে ক্যারিবীয় অঞ্চলের চারটি দেশ—বাহামাস, বার্বাডোজ, জ্যামাইকা এবং ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, এবং ইউরোপের পাঁচটি দেশ—আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে, স্লোভেনিয়া, স্পেন ও আর্মেনিয়া ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
১৯৮৮ সালে ফিলিস্তিনি নেতা ইয়াসির আরাফাত স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ঘোষণা করেছিলেন। সে সময় জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পর্যবেক্ষক মিশনের তথ্যমতে, ১৩৯টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। এরপর থেকে আরও কিছু রাষ্ট্র কূটনৈতিক স্বীকৃতি দেয়ায় এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪৯-এ।
তবে এএফপির বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অন্তত চারটি দেশ—চেক প্রজাতন্ত্র, হাঙ্গেরি, মাল্টা ও পাপুয়া নিউগিনি—তাদের অবস্থান বদল বা অনিশ্চয়তার কারণে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ভ্যাটিকানকেও তালিকায় রাখা হলেও সেটি জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক, সদস্য রাষ্ট্র নয়।
এ ছাড়া আফ্রিকার তিন দেশ—সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, ইথিওপিয়া ও টোগো—ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আবার, মেক্সিকো দীর্ঘদিন ধরেই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে থাকলেও, তালিকায় স্থান পায়নি।
সবশেষ এএফপির তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে বর্তমানে ১৪২টি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে এই সংখ্যা এখনও বিশ্ব মোড়লদের নীরবতা ভাঙাতে পারেনি।