জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)-এর সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু অভিযোগ করেছেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে মামলার বিচার আদালতে শুরুর আগেই মিডিয়ায় রায় দিয়ে ফেলছে। তিনি বলেন, “আপনারা আদালতে যা সিদ্ধান্ত নেন, তা মেনে নেব; কিন্তু বিচার শুরুর আগেই মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে বিচার শেষ করে ফেলা হচ্ছে।”
রোববার (২৭ জুলাই) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালতে তাকে দুদকের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর শুনানিতে হাজির করা হয়। শুনানির সময় এসব কথা বলেন ইনু।
পুলিশ গত বছরের ২৬ আগস্ট তাকে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে বিভিন্ন মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়। দুদক চলতি বছরের ১৬ মার্চ তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মামলা দায়ের করে এবং এরপর তাকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন জানায়। আদালত শুনানির জন্য রোববার দিন ধার্য করেন।
শুনানিতে হাজিরের সময় সকাল ৯টার দিকে ইনুকে মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানায় আনা হয়, যেখানে প্রায় ৫০ জন অন্যান্য আসামির সঙ্গে তাকে রাখা হয়। তার আইনজীবী মোহাম্মদ সেলিম আদালতে জানান, ইনু সেখানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছেন। তিনি আদালতের কাছে ভিআইপি আসামিদের জন্য পৃথক হাজতখানার দাবি জানান।
বিচারক বলেন, আসামিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব পুলিশের। আমাদের ইচ্ছা থাকলেও বিচারব্যবস্থা এখনো ডিজিটাল না হওয়ায় কিছুই করার নেই। বিচারক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশে বিভিন্ন সংস্থার বিলাসবহুল ভবন তৈরি হলেও বিচার ব্যবস্থার মৌলিক উন্নয়ন হয়নি। আদালত ভবনের টয়লেট থেকে শুরু করে বসার জায়গা পর্যন্ত নেই।
তিনি আরও বলেন, “আইনমন্ত্রীসহ অনেক এমপি ও মন্ত্রী আইনজীবী ছিলেন, কিন্তু তারা বিচার ব্যবস্থার উন্নয়নে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেননি।” তিনি সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সাম্প্রতিক আদালত পরিদর্শনের কথাও উল্লেখ করেন এবং বলেন, “আপনারা যদি বিচার ব্যবস্থাকে ডিজিটাল করতেন, তাহলে এই ভোগান্তি হতো না। ভিডিও কলে কারাগার থেকেই মামলার কার্যক্রম চলতে পারত।”