রাজধানীসহ দেশজুড়ে চাঁদাবাজির ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। পুরান ঢাকায় ব্যবসায়ী মো. সোহাগ ওরফে লাল চাঁদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের রেশ না কাটতেই, গত শনিবার গুলশানে সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদা আদায়ের চেষ্টার সময় পাঁচজনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
চাঁদাবাজরা নিজেদের ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে চাঁদা আদায়ে নাম লিখিয়েছে। তদন্তে জানা যায়, আটককৃতদের মধ্যে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় সদস্য আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ অন্যতম। তার বিরুদ্ধে বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, “বেদনায় একেবারে নীল হয়ে গেছি।”
চাঁদাবাজির অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব কেন্দ্রীয় ও আঞ্চলিক কমিটি স্থগিত এবং অভিযুক্তদের বহিষ্কার করা হয়েছে। সংগঠনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বিষয়টি স্বীকার করে কেঁদে ফেলেন ফেসবুক লাইভে।
চাঁদা না দিলে অপহরণ, হুমকি ও মব-সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠছে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে। টেকনাফ, সিলেট, ঝিনাইদহ, হবিগঞ্জ, বরিশালসহ নানা জেলায় ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে চলছে চাঁদাবাজি। স্থানীয় প্রশাসনের অনেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “চাঁদাবাজ যতই প্রভাবশালী হোক, ছাড় দেওয়া হবে না।”
সোহাগ হত্যার তদন্তেও উঠে এসেছে চাঁদা না দেওয়ায় বর্বর নির্যাতনের চিত্র। একাধিক ব্যক্তি তাঁর ওপর নির্মমভাবে হামলা চালায়। ঘটনাটি সামাজিক সচেতনতা বাড়ালেও চাঁদাবাজির লাগাম এখনো টেনে ধরা যাচ্ছে না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও সক্রিয় হতে হবে, নইলে এই নৈরাজ্য ভয়াবহ রূপ নেবে।