জুলাই শহীদদের রক্ত ও আকাঙ্ক্ষাকে পাশ কাটিয়ে ভিন্ন ধরণের রাজনীতির পথে যাওয়ার সাহস এখন আর কোনো রাজনৈতিক দলের থাকার কথা নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
বুধবার (৩০ জুলাই) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে তিনি এই কথা বলেন।
তিনি বলেন, “এখনকার প্রেক্ষাপটে আমি মনে করি, জাতিকে ধোঁকা দেওয়ার চিন্তা কোনো দলের মনেই নেই। আমরা কমিশনের যে সুপারিশ, তা দুই বছরের মধ্যে সংসদে বাস্তবায়নের প্রস্তাবে সম্মত হয়েছি। আমাদের বিশ্বাস, শহীদদের ত্যাগ ও জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা উপেক্ষা করে এখন কেউ ভিন্নভাবে রাজনীতি করার সাহস দেখাবে না।”
দেশে যেন আর ফ্যাসিবাদ ফিরে না আসে, সেই আশাবাদও ব্যক্ত করেন সালাহউদ্দিন। তিনি বলেন, “আমরা চাই গণতান্ত্রিক ধারায় রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে উঠুক। দুই মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী, স্বাধীন নির্বাচন কমিশন—এসব বিএনপির প্রস্তাবের অংশ। পাশাপাশি তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি চালুর বিষয়ে গণভোট আয়োজনের প্রস্তাবও দিয়েছি।”
নারীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণ বাড়াতে বিএনপির প্রস্তাব তুলে ধরে তিনি জানান, “আগামী নির্বাচনে সরাসরি ৫ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। সংরক্ষিত ৫০ আসনের পাশাপাশি সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হবে, যা ধীরে ধীরে বাড়িয়ে ১০০ আসনে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে।”
সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, এটি এককালীন নয়, চলমান প্রক্রিয়া। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আগে গঠিত ৬টি কমিশনের প্রস্তাবনার বিষয়ে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরেন তিনি।
তথ্য অনুযায়ী—
- সংবিধান সংস্কার কমিশনের ১৩১ প্রস্তাবের মধ্যে ১১৫টিতে একমত,
- দুদক বিষয়ক ৪৭টির মধ্যে ৪৬টিতে একমত,
- প্রশাসন সংস্কার কমিশনের ২০৮টির মধ্যে ১৮৭টিতে একমত ও ১১টিতে দ্বিমত,
- বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের ৮৯টির মধ্যে ৬২টিতে একমত,
- নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত ২৪২টির মধ্যে ১৪১টিতে একমত, ১৪টিতে আংশিক একমত এবং ৬৪টিতে ভিন্নমত রয়েছে।
- পুলিশ সংস্কার নিয়ে ১০৮টি প্রস্তাবে একমত হয়েছে বিএনপি।
এইভাবে বিভিন্ন দিক থেকে সংস্কার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নিজেদের প্রতিশ্রুতি ও অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে দলটি।