গাজায় চলমান ইসরায়েলি হামলার প্রেক্ষাপটে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কানাডা। বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) দেশটির প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দেন। এর আগে ইউরোপের প্রভাবশালী দেশ ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যও একই সিদ্ধান্ত জানায়।
কানাডার এই অবস্থানের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, “বাহ! কানাডা এখন ঘোষণা করেছে যে তারা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে সমর্থন দিচ্ছে। এ ধরনের অবস্থান নেওয়ার ফলে কানাডার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করা আমাদের জন্য অনেক কঠিন হয়ে উঠবে।”
এরই মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসন কানাডার ওপর বিভিন্ন ধরনের শুল্ক আরোপ করেছে। বিশেষ করে স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম এবং যানবাহনের ক্ষেত্রে বাড়তি শুল্ক কার্যকর রয়েছে। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন করে বাণিজ্য চুক্তি করতে আগ্রহ প্রকাশ করে কানাডা, তবে সময়মতো তা বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বলেও জানান দেশটির প্রধানমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহৎ বাণিজ্য অংশীদার। ২০২৪ অর্থবছরে দেশটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রায় ৩৪৯.৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করেছে প্রায় ৪১২.২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হলেও সাম্প্রতিক এই রাজনৈতিক অবস্থান তাৎপর্যপূর্ণ উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ফিলিস্তিন ইস্যুতে নিজের অবস্থান তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী কার্নি বলেন, “অটোয়া দীর্ঘদিন ধরে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক শান্তি সমাধানের পথে অগ্রসর হওয়ার আশা করেছিল। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সে সম্ভাবনা আর টিকে নেই। তাই কানাডা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে (২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে।”
বিশ্লেষকদের মতে, কানাডার এই সিদ্ধান্ত বিশ্বমঞ্চে ফিলিস্তিনকে সমর্থন দেওয়া দেশগুলোর অবস্থানকে আরও দৃঢ় করবে এবং একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কে নতুন উত্তেজনার জন্ম দিতে পারে।