অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের আড়ালে প্রায় ৩৪ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন বেক্সিমকো গ্রুপের কর্পোরেট গ্যারান্টেড সহযোগী প্রতিষ্ঠান অটাম লুপ অ্যাপারেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও শেয়ারহোল্ডার ওয়াসিউর রহমান।
সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট এই গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালনা করে।
সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের বিশেষ সুপার মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ-এর তত্ত্বাবধানে পরিদর্শক ছায়েদুর রহমানের নেতৃত্বাধীন একটি দল তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকার মধ্যবাড্ডা ডিআইটি প্রজেক্ট এলাকা থেকে ওয়াসিউর রহমানকে আটক করে।
কীভাবে ঘটেছিল পাচারের প্রক্রিয়া?
প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে আসে, জনতা ব্যাংকের লোকাল অফিস শাখা (১), দিলকুশা, মতিঝিল থেকে তিনটি এলসি এবং সেলস কন্ট্রাক্ট গ্রহণ করে অটাম লুপ অ্যাপারেলস লিমিটেড।
প্রতিষ্ঠানটি ৩০ ডিসেম্বর ২০২০ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সময়কালে আমদানির নামে পণ্য রপ্তানি করে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের বিধান অনুযায়ী, রপ্তানির চার মাসের মধ্যে রপ্তানিমূল্য দেশে ফেরত আনা বাধ্যতামূলক হলেও প্রতিষ্ঠানটি সেই অর্থ ফেরত আনেনি।
মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ
অটাম লুপ ইচ্ছাকৃতভাবে এই অর্থ দেশে না ফিরিয়ে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫) অনুযায়ী অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত।
গ্রেপ্তারকৃত ওয়াসিউর রহমান (৫০), পিতা: এম. এ. ওয়াহিদ, মাতা: বেগম নুরুন্নাহার—প্রতিষ্ঠানটির এমডি ও শেয়ারহোল্ডার হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।
তিনি ও অন্যান্য এজাহারনামীয় আসামিরা পরিকল্পিতভাবে স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে পণ্য রপ্তানি করে প্রায় ৩৪ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেন।
মামলা ও তদন্ত
ঘটনার ভিত্তিতে মতিঝিল (ডিএমপি) থানায় মামলা নং ১২ (তারিখ: ১৭/০৯/২০২৪) দায়ের করা হয়।
মামলাটি বর্তমানে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটে তদন্তাধীন।
ওয়াসিউর রহমানকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।
সালমান এফ রহমানের ভূমিকাও তদন্তাধীন
সিআইডি জানায়, এই পাচার-চক্রের সঙ্গে বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি (বেক্সিমকো)-এর ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান-এর ভূমিকা নিয়েও তদন্ত চলছে।
তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি আত্মীয়স্বজনদের নামে একাধিক প্রতিষ্ঠান খুলে বিদেশে অর্থ পাচারের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন।
সিআইডি জানিয়েছে, পাচার হওয়া অর্থের উৎস, গন্তব্য এবং বিদেশে কোনো অবৈধ সম্পদ রয়েছে কি না, সে বিষয়ে অনুসন্ধান এখনো চলমান।