বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে সংগৃহীত চাঁদার টাকা দিয়ে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছিলেন জানে আলম অপু ওরফে গৌরব জামান অপু। নিজেকে ছাত্রনেতা পরিচয় দিয়ে চাঁদা তুলে কিনেছিলেন দামি ইয়ামাহা এফজেড-এক্স ব্র্যান্ডের একটি মোটরসাইকেল এবং বাসা ভাড়া নিয়ে রাজধানীতে আয়েশি জীবন গড়ে তুলেছিলেন।
সম্প্রতি রাজধানীর গুলশানে আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় অবশেষে গ্রেপ্তার হয়েছেন অপু। শুক্রবার ভোরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের একটি দল তাকে গোপীবাগ এলাকা থেকে আটক করে। এরপর গুলশান থানা পুলিশ তাকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে মোহাম্মদপুরের নবীনগরের ভাড়া বাসা থেকে ১৫০ সিসির মূল্যবান মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে।
ডিবি সূত্রে জানা যায়, উদ্ধারকৃত ইয়ামাহা মোটরসাইকেলটির বাজারমূল্য প্রায় ৩ লাখ ৭ হাজার টাকা। অভিযানের সময় আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলামতও জব্দ করা হয়েছে।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার তালেবুর রহমান জানান, অপু গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক। মামলার এজাহারভুক্ত ছয় আসামির সবাইকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত ২৬ জুলাই সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের গুলশানস্থ বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে অপু ও তার সহযোগীরা। তারা দাবি করে, চাঁদা না দিলে শাম্মীর স্বামী আবু জাফরকে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে পুলিশে সোপর্দ করবে। প্রথমবারে তারা ১০ লাখ টাকা আদায় করে এবং সেই টাকা থেকেই অপু তার মোটরসাইকেলটি কেনে।
পরবর্তী সময়ে, আরও চাঁদা দাবি করতে ফের বাসায় গিয়ে হুমকি দেয়। ২৬ জুলাই তারা ১৫-২০ জন যুবক নিয়ে আবার হাজির হলে আতঙ্কিত হয়ে শাম্মীর স্বামী জাতীয় জরুরি নম্বর ৯৯৯-এ ফোন দেন। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের মধ্যে একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাকে বাদ দেওয়া হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন আব্দুর রাজ্জাক ওরফে রিয়াদ, সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব, ও মো. ইব্রাহিম হোসেন ওরফে মুন্না। পরে এই পাঁচজন এবং অপুকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন সিদ্দিক আবু জাফর।