বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত শুল্ক আর দুশ্চিন্তার কারণ নয়। শুক্রবার (১ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশে বাংলাদেশের জন্য পাল্টা শুল্ক হার ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণের ঘোষণা দিয়েছেন। এতে দেশের তৈরি পোশাক শিল্পে কিছুটা স্বস্তির বাতাস বইছে। উদ্যোক্তারা বলছেন, প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর সঙ্গে শুল্কহার প্রায় সমান হওয়ায় রপ্তানিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলছে।
বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, এখন বাংলাদেশের পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক ২০ শতাংশ, যা ভিয়েতনামের শুল্কহারের সমান। অন্যদিকে, ভারতের ওপর আগেই ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। চীনের সঙ্গে এখনো সমঝোতা না হলেও, চীনের ওপর ৩০ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ার ওপর ৩২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৯ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে। যদিও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে শুল্ক কিছুটা বেশি, তবে তা প্রতিযোগীদের তুলনায় বড় সমস্যা নয়।
তিনি আরও বলেন, সরকার কী ধরনের সুবিধা দিয়েছে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যেসব অঙ্গীকার করা হয়েছে— যেমন গম আমদানি, অশুল্ক বাধা দূরীকরণ, পণ্য আমদানি বৃদ্ধি— সেগুলো বাস্তবায়ন জরুরি। গম, তুলা, এলএনজি ক্রয় কিংবা উড়োজাহাজ কেনার মতো স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপগুলোর ক্ষেত্রে কোনো গাফিলতি ঘটলে ভবিষ্যতে জটিলতা তৈরি হতে পারে। বিজিএমইএ সদস্যদের উদ্দেশে তিনি জানান, এই বাড়তি শুল্ক রপ্তানিকারক বা আমদানিকারকদের নয়, বরং শেষপর্যন্ত মার্কিন ক্রেতাদেরই বহন করতে হবে।
বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমও এই শুল্কহার হ্রাসকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, এখন যেহেতু প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের শুল্ক প্রায় এক, তাই নতুন বাজার ও অর্ডারের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, যেহেতু আমরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানি করে পোশাক তৈরি করছি, তাই সেই পণ্যে রপ্তানিতে আরও শুল্ক ছাড়ের বিষয়টি সামনে রেখে এখন থেকেই কূটনৈতিক আলোচনার দরকার।
বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, চীন ব্যতীত অন্যান্য প্রধান পোশাক রপ্তানিকারক দেশের জন্য প্রায় সমান শুল্ক নির্ধারণ যুক্তরাষ্ট্রের একটি ভারসাম্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত। এতে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা রক্ষা পাবে।