বিএনপি যদি দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পায়, তবে প্রথম দিন থেকেই দেশের উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে কাজ শুরু করবে—এমনটাই জানিয়েছেন দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, এ লক্ষ্যে একটি বিশেষজ্ঞ টিম ইতোমধ্যে কাজ করছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইসিটি, ভেটেরিনারি সায়েন্সসহ বিভিন্ন খাতকে আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছে দিতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। এটাই হবে নতুন বাংলাদেশের উদ্দেশ্য।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আমীর খসরু বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দীর্ঘ সময় ধরে একচ্ছত্র শাসন চালিয়ে গেছেন। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন মানসিকতা ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন। ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ধারণ করেই এগোতে হবে।
তিনি আরও বলেন, “জুলাইয়ে যারা আত্মত্যাগ করেছেন, তাদের প্রতি সম্মান জানাতে হলে আমাদের প্রত্যেককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দেশ গঠনে অবদান রাখতে হবে। সেই চেতনায় নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের ভাবনায়, কথায় ও ব্যবহারে গণতন্ত্রের প্রতিফলন ঘটাতে হবে।”
সভায় সভাপতির বক্তব্যে সিভাসুর উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, “তোমরাই এ দেশের ভবিষ্যৎ। তোমরা হেরে গেলে বাংলাদেশ হেরে যাবে। তাই তোমাদের হার মানা চলবে না। রাষ্ট্র গঠনের দায়িত্ব ও আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার দায়িত্ব তোমাদেরই নিতে হবে। তোমরাই গণতন্ত্রের স্থায়ী রূপ দিতে পারবে। যদি তা সম্ভব হয়, তাহলে এই বাংলাদেশ হবে সুন্দর, নিরাপদ ও স্বাধীন। আর তবেই শহিদদের আত্মা শান্তি পাবে।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডা. ওমর ফারুক ইউসুফ, সিভাসুর পরিচালক (বহিরাঙ্গন কার্যক্রম) প্রফেসর ড. এ. কে. এম. সাইফুদ্দিন, পরিচালক (ছাত্রকল্যাণ) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রাশেদুল আলম এবং পরিচালক (পিআরটিসি) প্রফেসর ড. এ. কে. এম. হুমায়ুন কবির। স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। সভায় বক্তব্য রাখেন জুলাই আন্দোলনে আহত সিভাসুর ফুড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাহাত বিন জাহাঙ্গীর।
বিগত ১৫ বছরে বাংলাদেশের জনগণ অবিচারের শিকার হয়েছে উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, “৬০-৭০ লাখ মানুষের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ গুম ও খুন হয়েছেন। কেউ পুলিশের হেফাজতে, কেউ আবার কারাগারে চিকিৎসার অভাবে প্রাণ হারিয়েছেন। আমিও ৫ আগস্ট তারিখে কারাগারে ছিলাম। শেখ হাসিনার পতন ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র—এটি অবশ্যম্ভাবী ছিল।”