গত বছরের ৩ আগস্ট সারা দেশে যখন শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ চলছিল, সেই সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটির সাবেক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস দেশত্যাগের উদ্দেশ্যে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান। তার গন্তব্য ছিল সিঙ্গাপুর। তবে ইমিগ্রেশন কার্যক্রমের সময় জিও (Government Order) না থাকায় তাকে বিমানবন্দরে আটকে দেন কর্মকর্তারা।
এই অবস্থায় তাপস সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করেন এবং অনুরোধ করেন যেন ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাকে ছাড় দেওয়ার জন্য বলে দেওয়া হয়। এ সময় হাসিনাকে ‘হাসুমনি’ বলে সম্বোধন করতেও শোনা যায় তাকে।
সম্প্রতি এই ফোনালাপের দুটি অডিও ফাঁস হয়েছে। একটি রেকর্ডিং ২২ জুলাইয়ের এবং অন্যটি ৩ আগস্টের বলে দাবি করা হচ্ছে।
৩ আগস্টের অডিওতে শোনা যায়, তাপস শেখ হাসিনাকে বলেন,
‘আমি একটু সিঙ্গাপুর যেতে চাচ্ছিলাম, যাব?’
জবাবে হাসিনা বলেন,
‘হ্যাঁ যাও, যাবা না কেন?’
তাপস জানান,
‘আমি এয়ারপোর্টে চলে আসছি। কিন্তু জিও এখনো হয়নি, তাই সমস্যা করছে।’
জবাবে হাসিনা বলেন,
‘তাহলে সঙ্গে নিলে না কেন?’
তাপস জানান,
‘অ্যাপ্লাই করেছি, কিন্তু অনুমোদন হতে দেরি হবে।’
তিনি অনুরোধ করেন,
‘ইমিগ্রেশনে কাউকে বলে দিলে ভালো হয়। ফ্লাইট ছাড়ার সময় হয়ে গেছে।’
হাসিনা তখন জিজ্ঞেস করেন,
‘ফাইল পাঠিয়েছো?’
তাপস বলেন,
‘হ্যাঁ, প্রমিত মহোদয় পাঠাচ্ছেন।’
হাসিনা বলেন,
‘আচ্ছা, দিয়ে দাও।’
পরে তাপস বলেন,
‘এখানে একজন ইমিগ্রেশন অফিসার আছেন, আপনি কি কথা বলবেন?’
জবাবে হাসিনা বলেন,
‘না, আমি সরাসরি কথা বলব না। আমার অফিসের মাধ্যমে জানিয়ে দিচ্ছি। আমার সেক্রেটারিকে বলো, শাহ সালাউদ্দিন।’
তাপস নিশ্চিত হয়ে বলেন,
‘সালাউদ্দিন সাহেব?’
হাসিনা জবাব দেন,
‘হ্যাঁ।’
২২ জুলাইয়ের আরেক অডিওতে শোনা যায়, তাপস শেখ হাসিনাকে বলেন,
‘হাসুমনি, তোমাকে দেখতে একটু আসতে চাচ্ছিলাম, পারি?’
হাসিনা জবাব দেন,
‘এসবের মধ্যে আসার দরকার নেই।’
তাপস আবার বলেন,
‘তাহলে কারফিউ শিথিল হলে আসি?’
হাসিনা বলেন,
‘তখন অফিসে থাকব। ব্যবসায়ীদের ডাকছি ২-৩টার সময়।’
তাপস বলেন,
‘তাহলে ওই সময় অফিসে এসেই দেখা করে যাব।’