৫ আগস্ট—বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক স্মরণীয় দিন হিসেবে গণ্য হচ্ছে। ২০২৪ সালের এই দিনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোপনে গণভবন ত্যাগ করে ভারত গমন করেন। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই আজ মঙ্গলবার রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে উদযাপিত হলো ‘জুলাই পুণর্জাগরণ দিবস’।
আয়োজকদের ভাষ্যে, এই দিনটি ছিল দুঃশাসনবিরোধী গণ-আন্দোলনের চূড়ান্ত বিজয়ের প্রতীক। শেখ হাসিনার গোপন দেশত্যাগে একটি কর্তৃত্ববাদী অধ্যায়ের অবসান ঘটে, এবং দেশের গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো নতুন করে সংগঠিত হওয়ার সুযোগ পায়।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ ছিল প্রতীকী হেলিকপ্টার প্রদর্শনী। শত শত হেলিয়াম বেলুন দিয়ে তৈরি হেলিকপ্টার আকাশে ছেড়ে দেওয়া হয়, যা শেখ হাসিনার ‘পলায়ন’ মুহূর্তকে নাটকীয়ভাবে চিত্রিত করে। আকাশে হেলিকপ্টার আকৃতির বেলুন উড়তেই উপস্থিত জনতা আনন্দে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়ে, অনেকে মোবাইলে সেই মুহূর্ত ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।
অনুষ্ঠানের সূচনা হয় সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠীর পরিবেশনার মাধ্যমে। তাঁরা দেশের ইতিহাস, সংগ্রাম ও পুনর্জাগরণ নিয়ে সংগীত পরিবেশন করেন, যা দর্শকদের অনুপ্রেরণা জোগায় এবং আয়োজনকে বর্ণাঢ্য করে তোলে।
একজন আয়োজক বলেন, “এই দিনটি শুধু একটি রাজনৈতিক ঘটনার বর্ষপূর্তি নয়, এটি একটি দুঃশাসনের পতনের প্রতীক। দেশের মানুষ আর ভয়ভীতির শাসনে থাকতে চায় না।”
আরেকজন অংশগ্রহণকারী বলেন, “আমরা এই দিনটিকে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সূচনাদিন হিসেবে দেখি। এটা উদযাপন করার মধ্য দিয়ে আমরা দেশপ্রেমের বার্তা ছড়িয়ে দিতে চাই।”
পটভূমি:
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দুপুরে শেখ হাসিনা ঢাকা থেকে হঠাৎভাবে দিল্লিতে যোগাযোগ করেন এবং ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ভারতে প্রবেশের অনুমতি চান। তিনি একটি সামরিক বিমানে করে দেশ ত্যাগ করেন। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর দেশে ও আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
এই ঘটনার পর ‘জুলাই পুণর্জাগরণ’ আন্দোলন নতুন গতি পায় এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আয়োজিত হয় বিক্ষোভ, গণসমাবেশ ও নাগরিক জাগরণ।