কখনো নিজেকে মানবাধিকারকর্মী, কখনো ইমিগ্রেশন অফিসার, আবার কখনো ডিবি পুলিশের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সময় সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করতেন কামাল হোসেন ওরফে ইমন (৩৭)। দীর্ঘদিন ধরে ছদ্মবেশে প্রতারণা করে আস্থা অর্জন করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়াই ছিল তার মূল কাজ। অবশেষে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার শ্বশুরবাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে পীরগঞ্জ থানা পুলিশ।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার মো. আশরাফুল ইসলামের করা মামলায় গত ৪ আগস্ট (সোমবার) রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন (৫ আগস্ট) আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
পুলিশ জানায়, আশরাফুল ইসলাম তার বাবা-মা ও খালাকে নিয়ে পবিত্র উমরাহ পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় অনলাইনে তার পরিচয় হয় কামাল হোসেনের সঙ্গে, যিনি নিজেকে ইমিগ্রেশন অফিসার ও একটি হজ এজেন্সির মালিক বলে পরিচয় দেন। আশরাফুল তার মাধ্যমে উমরাহতে যাওয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। এরপর ভিসা, টিকিট, হোটেল বুকিং ইত্যাদির জন্য অগ্রিম ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা দেন।
টাকা নেওয়ার পর থেকেই কামালের মোবাইল বন্ধ, ঠিকানা ভুয়া এবং কোনো যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে আশরাফুল ইসলাম গত ৫ ফেব্রুয়ারি পীরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার পর পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ও ব্যাংক লেনদেনের ভিত্তিতে কামালের অবস্থান শনাক্ত করে। পরে তার শ্বশুরবাড়ি, নলডাঙ্গার ঠাকুর লক্ষ্মীকুল গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ বলছে, কামাল শুধু একা প্রতারণা করতেন না, বরং তিনি একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা চালিয়ে আসছিলেন তিনি। বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন পরিচয়ে মানুষের বিশ্বাস অর্জনই ছিল তার মূল হাতিয়ার।
পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, গ্রেপ্তার কামালের রিমান্ড আবেদন করা হবে। একইসঙ্গে তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতারক চক্রের অন্যান্য সদস্যদেরও শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার কাজ চলছে।