Wednesday, August 6, 2025
spot_imgspot_img
Homeজাতীয়নির্বাচনের আগে পরিবেশ ও প্রতিষ্ঠান নিয়ে প্রশ্ন, রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থানে ভিন্নতা

নির্বাচনের আগে পরিবেশ ও প্রতিষ্ঠান নিয়ে প্রশ্ন, রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থানে ভিন্নতা


ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের ঘোষণা ও জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র প্রকাশের পর বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল স্বাগত জানালেও এখনো রাজনৈতিক অঙ্গনে রয়ে গেছে নানা সংশয়। নির্বাচন-সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকারিতা ও মাঠ পর্যায়ে সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এনসিপি ও জামায়াত। তবে বিএনপির মতে, সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রধান প্রত্যাশা ছিলো একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ ও নির্বাচনী সনদ। শেষ পর্যন্ত একই দিনে মিলেছে দুই ঘোষণাই।
জুলাই মাসে গণআন্দোলনের এক বছর পূর্তির দিনে প্রকাশিত হয় ঘোষণাপত্র, যার কয়েক ঘণ্টা পরেই নির্বাচনের সময়সীমার আভাস পাওয়া যায়— রমজানের আগেই, অর্থাৎ ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

তবে ঘোষণাপত্র প্রকাশের পরেও রাজনৈতিক মাঠে রয়ে গেছে কিছু ‘যদি’ ও ‘কিন্তু’। নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপি মনে করে, ঘোষণাপত্রে সব পক্ষকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা থাকলেও কিছু ঘাটতি রয়ে গেছে। নির্বাচনী পরিবেশ এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকারিতা এখনো অনুপস্থিত বলেও দাবি করে তারা।

জাতীয় নাগরিক কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, ‘ঘোষণাপত্রে চেষ্টা করা হয়েছে যেন সবাইকে সঙ্গে নিয়ে তা প্রকাশ করা যায়। একদফার প্রসঙ্গকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার একটি চেষ্টাও সেখানে রয়েছে। তবে নির্বাচন-সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত নয়। যদি তারা সময়ের মধ্যে প্রস্তুত হয়, তাহলেই কেবল ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন সম্ভব।’

এদিকে এবি পার্টি প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণাকে ইতিবাচক বলে জানিয়ে, নির্বাচন যেন জুলাই সনদের ভিত্তিতেই হয়— সেই আহ্বান জানিয়েছে।

এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা ঘোষণাকে স্বাগত জানাই। তবে চাই নির্বাচন হোক জুলাই সনদের আলোকে। এতে বিভেদ কমে আসবে, সুষ্ঠু বিচার হবে এবং প্রস্তাবিত সংস্কার বাস্তবায়ন করে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করা সম্ভব হবে।’

জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, কেবল ঘোষণা নয়, তা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন আইনি কাঠামো। দলটির মতে, এখনো মাঠ পর্যায়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ গড়ে ওঠেনি।

ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘সংস্কারগুলো আইনি কাঠামোর মধ্যে না আনলে এ ঘোষণা শুধু লোকদেখানো চমক হিসেবেই থেকে যাবে। শহিদদের তালিকাও এখনো সম্পন্ন হয়নি। মাঠে এখনও চাঁদাবাজি চলছে। এই বাস্তবতা পরিবর্তন না হলে নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি হবে না।’

অন্যদিকে বিএনপি বলছে, নিরপেক্ষতা রক্ষা করা হলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা ষড়যন্ত্রের শঙ্কাও কমিয়ে আনবে বলে মনে করছে দলটি।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম বলেন, ‘নির্বাচনের মাধ্যমে যদি একটা বৈধ সরকার গঠিত হয়, তখন ষড়যন্ত্র করে ধরা পড়লে আর রেহাই নেই। এটাই ষড়যন্ত্র কমে আসার বড় কারণ হবে। তাই নিরপেক্ষতা যেন নষ্ট না হয়— সেটাই এখন গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি, উপদেষ্টা এবং তার আশপাশের লোকজন এ বিষয়ে সতর্ক থাকবেন।’

বিশ্লেষকদের মতে, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে হলে সরকারের কার্যকর উদ্যোগের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Ask ChatGPT

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments