জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির দিনে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে না গিয়ে ব্যক্তিগত সফরে কক্সবাজারে গিয়েছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর শীর্ষ পাঁচ নেতা। এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে জোর আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়। গুজব ছড়ায়, তারা মার্কিন সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন—যা নেতারা গুজব বলেই উড়িয়ে দিয়েছেন।
তবে, দলের অনুমতি না নিয়ে সফরে যাওয়ায় এনসিপি এই পাঁচ নেতাকে শোকজ করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলে। এই সময়সীমার মধ্যেই, বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে শোকজের জবাব প্রকাশ করেন দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
তিনি বলেন, “৫ আগস্টে আমার কোনো রাষ্ট্রীয় বা সাংগঠনিক দায়িত্ব ছিল না, এমনকি দল থেকেও কোনো কর্মসূচির কথা জানানো হয়নি। ৪ আগস্ট রাতে দলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ কোচিং অফিসের সহকর্মীর ফোনে জানায়, সে স্কুলবন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যাবে। আমি তাকে আহ্বায়ককে জানাতে বলি। একই রাতে আমি নিজে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি জানাই।”
তিনি আরও জানান, “আমার ঘোরার উদ্দেশ্য ছিল ব্যক্তিগত বিশ্রাম এবং রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে মনোযোগ দিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা। সাগরের পাড়ে বসে আমি ভাবছিলাম নাগরিক কমিটি, গণপরিষদ, দলের কাঠামো ও ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক সংবিধান নিয়ে। এটি কোনো অপরাধ নয়, বরং একজন রাজনৈতিক কর্মীর জন্য একটি দায়িত্বশীল মানসিক অনুশীলন।”
পিটার হাসকে ঘিরে ছড়ানো গুজব প্রসঙ্গে নাসীরুদ্দীন বলেন, “এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচার। হোটেল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে পিটার হাস ওই সময় সেখানে ছিলেন না। পরে নিশ্চিত হই, তিনি তখন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিলেন।”
তিনি অভিযোগ করেন, এই গুজব পরিকল্পিতভাবে ছড়ানো হয়েছে যাতে তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়। “আমি আগেও কক্সবাজার সফরে গেছি, কখনো এমন কিছু ঘটেনি। ঘুরতে যাওয়াকে দলের বিধি লঙ্ঘন বলে আগে কখনো কিছু বলা হয়নি।”
পরিশেষে, দলীয় নীতিমালার প্রতি সম্মান জানিয়ে তিনি বলেন, “পরিস্থিতি বিবেচনায় আমি মনে করি শোকজটি বাস্তবতা বিবর্জিত। আমার সফর ছিল একান্ত ব্যক্তিগত, স্বচ্ছ এবং কোনো সাংগঠনিক নিয়ম ভঙ্গ করিনি। তবুও রাজনৈতিক শালীনতা বজায় রেখে দলের প্রতি সম্মান জানিয়ে এই জবাব দিচ্ছি। সভ্যতার এক নিদর্শন হিসেবে।”