জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রায় দুই শতাধিক কর্মকর্তার সম্পদ ও আর্থিক লেনদেন যাচাইয়ে মাঠে নেমেছিল দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এনফোর্সমেন্ট টিম। অনুসন্ধানে ১৩৫ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের বাইরে সম্পদ অর্জন, নিজ ও স্বজনদের ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেন এবং বিদেশে অর্থ পাচারের প্রমাণ পেয়েছে দুদক। দ্রুত তদন্ত শেষ করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, এসব কর্মকর্তা সঠিক কর আদায় না করে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে উৎকোচ নিয়েছেন, ভুয়া নথি অনুমোদন করেছেন, কর কমিয়ে দিয়েছেন এবং ঘুষের বিনিময়ে তথ্য গোপন করে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি করেছেন। অনেকেই অবৈধ অর্থে বিদেশে বাড়িও কিনেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মাঠ পর্যায়ে সংগৃহীত প্রতিবেদনগুলো দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এসেছে এবং সেগুলো যাচাই চলছে। ওই কর্মকর্তাদের পরিবারের ব্যাংক হিসাবেও অস্বাভাবিক লেনদেন পাওয়া গেছে, যা তাদের আর্থিক অবস্থার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
এর আগে ২৯ জুন ঘুষের বিনিময়ে করদাতাদের কর ফাঁকির সুযোগ দেওয়ার অভিযোগে এনবিআরের ৬ কর্মকর্তা এবং ৩ জুলাই আরও ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে দুদক। তাদের মধ্যে রয়েছেন এ কে এম বদিউল আলম, হাসান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার, মির্জা আশিক রানা, মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, সাধন কুমার কুণ্ডু, মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দীন খান, কাজী মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, কামরুজ্জামান, মামুন মিয়া, সেহেলা সিদ্দিকা ও লোকমান আহমেদ।
বর্তমানে আরও বহু কর কর্মকর্তা—যেমন কর গোয়েন্দা ও তদন্ত বিভাগের মো. আলমগীর হোসেন, কাস্টমস নীতির সদস্য হোসেন আহমেদ, ভ্যাট নীতির সদস্য মো. আবদুর রউফ, বরিশাল কর অঞ্চলের কমিশনার মো. শাব্বির আহমেদসহ বিভিন্ন কর অঞ্চল ও সার্কেলের মোট ১৩৫ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
দুদকের এক পরিচালক জানান, প্রাথমিকভাবে ১১ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। খুব শিগগির প্রতিবেদন জমা হবে। দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন বলেন, তদন্ত শেষ হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।