বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও ভারতের রাজনৈতিক স্বার্থে বাংলাদেশে একটি দাঙ্গা লাগানো প্রয়োজন হতে পারে। তার মতে, এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হলে রাজনৈতিক মোড় ঘুরে যেতে পারে এবং নির্বাচন বানচাল হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। তাই জাতীয় স্বার্থে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্ট আয়োজিত সনাতনী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গয়েশ্বর বলেন, “শেখ মুজিব বিহারি–বাঙালি দাঙ্গা লাগিয়ে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়েছিলেন। এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরিতে আওয়ামী লীগ বরাবরই পটু—দরকার হলে নিজের ঘরেও আগুন লাগাতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “মানুষ কিংবা ধর্ম নিজে সাম্প্রদায়িক নয়। কিন্তু রাজনৈতিক প্রয়োজনে কখনো দাঙ্গা-ফ্যাসাদ ঘটানো হয়, যাতে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নেওয়া যায়। ১৯৮৮ সালে এরশাদও এমনটি করেছিলেন। ইতিহাসে দেখা গেছে, ভারতীয় উপমহাদেশে বহু সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পেছনে ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বা গুজব।”
গয়েশ্বর দাবি করেন, বাংলাদেশে মুসলমান নয়, বরং হিন্দুরাই হিন্দুদের ক্ষতি করে। “আমি হিন্দু-মুসলমানের বিভাজন মানি না, আমি শুধু ভালো ও খারাপ মানুষের পার্থক্য বুঝি,” বলেন তিনি। তার প্রস্তাব, দেশের সব মন্দিরকে দেবোত্তর সম্পত্তি ঘোষণা করে সীমানা নির্ধারণ করা উচিত।
সমাবেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনার আমলে বহু মন্দির ও প্রতিমা ভাঙা হয়েছে, আর ধরা পড়া অধিকাংশ অপরাধী আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। তার দাবি, শেখ হাসিনা বিদেশে পালিয়ে থেকেও ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন।
রিজভী আরও বলেন, “বিবিসি জানিয়েছে কলকাতায় আওয়ামী লীগের একটি অফিস নেওয়া হয়েছে, যেখানে বড় নেতাদের যাতায়াত শুরু হয়েছে। এতে সন্দেহ হচ্ছে, বড় ধরনের পরিকল্পনা সেখানে করা হচ্ছে কি না। কলকাতায় অফিস খোলা এবং দেশের ভেতরে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর মধ্যে যোগসূত্র অস্বীকার করা যায় না।”
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পূজা উদযাপন ফ্রন্টের সভাপতি অপর্ণা রায় দাস। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, যুগ্ম মহাসচিব মীর সরাফত আলী, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী ও জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামানিক।