যুক্তরাজ্যে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর তিনটি কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আর্থিক সংস্থা গ্রান্ট থর্নটনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান। শুক্রবার (৮ আগস্ট) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিসনাউ জানিয়েছে, এই তিন প্রতিষ্ঠানের মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১৪২ মিলিয়ন পাউন্ড। গত ২৯ জুলাই এগুলোর দায়িত্ব গ্রহণ করে প্রশাসক সংস্থা।
সাধারণত কোনো প্রতিষ্ঠান ঋণ শোধে অক্ষম হলে বা কার্যক্রম চালাতে না পারলে তা দেউলিয়ার পথে যায় এবং তখন প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে উদ্ধার প্রচেষ্টা চালানো হয়। সাইফুজ্জামানের এই কোম্পানিগুলোও আর্থিক সংকটে পড়ে এমন অবস্থায় পৌঁছেছে।
যুক্তরাজ্যের আবাসন ব্যবসায় বিপুল বিনিয়োগে অর্থপাচারের অভিযোগ রয়েছে সাইফুজ্জামানের বিরুদ্ধে, যা নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন ইতিমধ্যে তাকে অভিযুক্ত করেছে।
বিসনাউ-এর তথ্যমতে, সাইফুজ্জামানের মালিকানাধীন জেটিএস প্রপার্টিস লিমিটেড, রুখমিলা প্রপার্টিস লিমিটেড এবং নিউ ভেঞ্চার্স (লন্ডন) লিমিটেড-এ গত ২৯ জুলাই প্রশাসক নিয়োগ হয়। এর মধ্যে জেটিএস প্রপার্টিসের সম্পদ সবচেয়ে বেশি—৭৭ মিলিয়ন পাউন্ড, যা অন্য দুই কোম্পানির তুলনায় বেশি।
তথ্য অনুযায়ী, এ তিন কোম্পানির কাছে বিভিন্ন ব্যাংকের পাওনা প্রায় ৭৮ মিলিয়ন পাউন্ড। সিঙ্গাপুরভিত্তিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ডিবিএস, জেটিএসের বিভিন্ন প্রপার্টির বিপরীতে ঋণ দিয়েছে।
এর আগে চলতি বছরের শুরুতে সাইফুজ্জামানের আরও তিনটি প্রতিষ্ঠানে প্রশাসক বসানো হয়, যেগুলোর সম্মিলিত সম্পদের পরিমাণ ছিল ২৯ মিলিয়ন পাউন্ড। মূলত লন্ডনের ফ্ল্যাটকে জামানত দেখিয়ে এসব ঋণ নেওয়া হয়েছিল।
গত সপ্তাহে বিসনাউ জানায়, বছরের শুরুতে প্রশাসকের অধীনে যাওয়া কোম্পানিগুলোর সম্পদ বিক্রি শুরু করেছে গ্রান্ট থর্নটন।
প্রসঙ্গত, সাবেক আওয়ামী এমপি ও ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান যুক্তরাজ্যে ৫০০ মিলিয়ন পাউন্ডেরও বেশি মূল্যের সম্পত্তি ক্রয় করেছিলেন, যদিও মন্ত্রী হিসেবে তার সরকারি বেতন ছিল নির্দিষ্ট সীমিত পরিমাণে। দুর্নীতি ও অর্থপাচারের অভিযোগে যুক্তরাজ্যের জাতীয় অপরাধ সংস্থা তার ১৭০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের সম্পদ ইতিমধ্যে জব্দ করেছে।