যশোর-খুলনা মহাসড়কের ৩৩ কিলোমিটার অংশে বছরের পর বছর কোটি কোটি টাকা ব্যয় হলেও ভোগান্তি কমেনি। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের একাধিকবার ঠিকাদার পরিবর্তন, সতর্কবার্তা ও নোটিশ দিলেও সড়কটি চলাচলের উপযোগী হয়নি।
২০১৮ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে যশোর শহরের চাঁচড়া থেকে অভয়নগরের রাজঘাট পর্যন্ত অংশে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমানে আরও ৩১ কোটি টাকার সংস্কার কাজ চলমান। তবুও মহাসড়কটির অবস্থা এতটাই নাজুক যে যাত্রীবাহী বাস প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, কাজের দায়িত্ব পেয়েছিল মন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী মহলের ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘তমা কনস্ট্রাকশন’ ও ‘মাহবুব অ্যান্ড ব্রাদার্স’। ২০২০ সালে কাজ শেষ হলেও অল্প সময়ের মধ্যেই সড়কের যশোর অংশ ফুলে উঠে সরু লেনে পরিণত হয়, বাড়তে থাকে দুর্ঘটনা।
বুয়েটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাকারিয়ার রিপোর্টে দেখা যায়, বিটুমিনের পুরুত্ব কম এবং ভারী যানবাহনের জন্য পর্যাপ্ত সক্ষমতা নেই সড়কটির। চার লেনে উন্নীতকরণ ও ওজন নিয়ন্ত্রণের সুপারিশ থাকলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।
বর্তমানে যশোর অংশে সংস্কারকাজের দায়িত্ব সিরাজগঞ্জের ‘তূর্ণা এন্টারপ্রাইজ’-এর হলেও, প্রকৃতপক্ষে কাজ করছেন যশোরের বাবু পাটোয়ারী নামে এক ঠিকাদার। জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম বলেন, এত টাকা ব্যয় করার পরও সড়কের মান এমন নিম্নমানের—যেন কয়েন দিয়ে বানালেও এর চেয়ে ভালো হতো।
এইভাবে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যশোর-খুলনা মহাসড়ক বছরের পর বছর অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও প্রভাবশালী মহলের স্বার্থের কারণে মানুষের দুর্ভোগের প্রতীক হয়ে আছে।