Sunday, August 10, 2025
spot_imgspot_img
Homeদেশের খবরগাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যা: ১৫ দিনের মধ্যে চার্জশিট দেওয়ার ঘোষণা জিএমপি কমিশনারের

গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যা: ১৫ দিনের মধ্যে চার্জশিট দেওয়ার ঘোষণা জিএমপি কমিশনারের


গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যার ঘটনায় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর ১৫ দিনের মধ্যেই চার্জশিট দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছেন গাজীপুর মহানগর পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার ড. নাজমুল করিম খান।

শনিবার (৯ আগস্ট) দুপুরে ওয়্যারলেস গেট এলাকায় জিএমপি সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। এসময় তিনি তুহিন হত্যায় যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং নিহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

কমিশনার বলেন, সাংবাদিক হত্যার দায় পুলিশ এড়াতে পারে না। জনবল স্বল্পতা ও অন্যান্য সীমাবদ্ধতা থাকলেও অপরাধ দমনে জনগণের সহযোগিতা জরুরি। বিশ্বের কোথাও অপরাধ একেবারে শূন্য নয়, তাই শত চেষ্টা সত্ত্বেও অপরাধ ঘটতে পারে।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি জানান, হত্যার দিন প্রথমে বাদশা মিয়া নামে একজন স্থানীয় একটি এটিএম বুথ থেকে ২৫ হাজার টাকা তোলেন। পরে গোলাপি নামের এক নারী তাকে হানি ট্র্যাপে ফাঁসানোর চেষ্টা করেন। বিষয়টি বুঝে বাদশা মিয়া তাকে ঘুষি মারেন, যা সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে। এরপর গোলাপির সহযোগী ৫-৬ জন চাপাতি দিয়ে বাদশা মিয়াকে আক্রমণ করে।

এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিক তুহিন পুরো ঘটনা ভিডিও ধারণ করছিলেন। আসামিরা বিষয়টি টের পেয়ে তুহিনকে ভিডিওটি দিতে বাধ্য করার চেষ্টা করে এবং ধাওয়া করে। একপর্যায়ে তুহিন একটি চায়ের দোকানে আশ্রয় নিলেও সেখান থেকে টেনে বের করে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

কমিশনার জানান, ঘটনার পর সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আটজনকে চিহ্নিত করা হয় এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— কেটু মিজান (৩৫) ও তার স্ত্রী গোলাপি (২৫), মো. স্বাধীন (২৮), আল আমিন (২১), শাহজালাল (৩২), ফয়সাল হাসান (২৩) এবং সুমন। প্রধান আসামি কেটু মিজানের নামে ১৫টি মামলা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, নিহত তুহিন সংঘবদ্ধ অপরাধচক্রের কর্মকাণ্ড ধারণ করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। প্রমাণ হিসেবে সিসিটিভি ফুটেজ, প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য ও অন্যান্য তথ্য পুলিশের হাতে রয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে দ্রুত চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হবে এবং সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের চেষ্টা করা হবে।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার একটি মার্কেটে সাংবাদিক তুহিনকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। তিনি দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার ছিলেন এবং স্ত্রী-সন্তানসহ সেখানেই ভাড়া বাসায় থাকতেন। হত্যার ঘটনায় বাসন থানায় দুটি মামলা হয়েছে, একটি নিহতের ভাই এবং অন্যটি বাদশা মিয়ার ভাইয়ের করা।

পরের দিন শুক্রবার ময়নাতদন্ত শেষে তুহিনের জানাজা চান্দনা চৌরাস্তা ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হয় এবং পরে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার নিজ গ্রামে তাকে দাফন করা হয়।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments