ব্রহ্মপুত্র নদের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল ঘেরা জামালপুর-৫ (সদর) আসনটি একসময় আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এই আসনে কার্যত পলাতক। এখন এখানে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছেন আপন দুলাভাই ও শ্যালক, পাশাপাশি সংরক্ষিত আসনের সাবেক এক নারী সাংসদ। একইসঙ্গে জামায়াত ইসলামীর একক প্রার্থীসহ বিভিন্ন দলের নেতাদের পদচারণায় সরব হয়ে উঠেছে ভোটের মাঠ।
এ জেলার সবচেয়ে বড় এই আসনে দলীয় কর্মসূচির বাইরে সম্ভাব্য প্রার্থীরা পারিবারিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ভোটারদের কাছে নিজেদের তুলে ধরছেন। স্বাধীনতার পর থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত এখানে দুইবার বিএনপি, পাঁচবার আওয়ামী লীগ ও একবার জাতীয় পার্টি জয়ী হয়েছে। ১৯৯১ সালে বিএনপির বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক জয় পেয়ে স্বাস্থ্য উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। তিনি মোট চারবার (১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮) বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, তবে জয় পান কেবল প্রথমবার।
এই আসনে বিএনপির অপর সম্ভাব্য প্রার্থী হলেন সিরাজুল হকের আপন শ্যালক, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, সাবেক দুইবারের পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন। ২০১৮ সালে তিনি প্রথমবার দলীয় মনোনয়ন পান, তবে ভোটের দিন অনিয়মের অভিযোগে নির্বাচন বর্জন করেন। দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের শাসনামলেও তিনি বিএনপির কর্মীদের পাশে থেকে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে গেছেন।
সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদল নেত্রী নিলুফার চৌধুরী মনিও এখানে মনোনয়নপ্রত্যাশী। টেলিভিশনের টকশো ও স্থানীয় কর্মসূচির মাধ্যমে তিনি নিজের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন।
জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী হলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও জেলা আমির মাওলানা মোহাম্মদ আব্দুস সাত্তার। দক্ষ সংগঠক ও সৎ মানুষ হিসেবে পরিচিত এই প্রার্থী গ্রামীণ এলাকায় প্রচারণা চালাচ্ছেন।
এছাড়া, ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, আমার বাংলাদেশ পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ছানোয়ার হোসেন, ইসলামী আন্দোলনের জেলা সভাপতি মুফতি মোস্তফা কামাল, এবং বাংলাদেশ কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতা আবু সায়েম মো. সা’আদাত উল করীমও আসনটিতে সক্রিয়।
তবে জাতীয় পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদ এখনো মাঠে তেমন কোনো কার্যক্রম শুরু করেনি। নতুন কমিটি পেলেও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)ও নির্বাচনী মাঠে অনুপস্থিত।