ভারতের মেঘালয় রাজ্যের দক্ষিণ-পশ্চিম খাসি হিলস জেলায় পাঁচ বাংলাদেশিকে আটক করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। গত শনিবার ও রোববার পৃথক অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযোগ, তারা ভারতীয় এক নাগরিককে অপহরণ ও হত্যার চেষ্টা চালিয়েছিল।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, আটককৃতদের মধ্যে তিনজন নিজেদের আওয়ামী লীগ কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়েছে এবং একজন নিজেকে বাংলাদেশ পুলিশের সদস্য বলে দাবি করেছে। তারা ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর ভারতে প্রবেশ করে পালিয়ে যায়।
গ্রেপ্তারের সময়ের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এক ভিডিওতে দেখা যায়, তাদের হিন্দিতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সেখানে একজন বলছেন, ‘আমরা শেখ হাসিনার দল করতাম। এই দেশে অবৈধ সরকার চলে এসেছে। তখন তারা আমাদের রাস্তা দেখিয়ে এই দেশে নিয়ে এসেছে। আমাদের নিরাপত্তা বাংলাদেশে নেই…’ এরপর চারপাশের কথাবার্তার কারণে বাকিটা পরিষ্কার শুনা যায়নি।
ভিডিওতে ধরা পড়ে তিনজনের হাত বাঁধা, কারো গায়ে ছেঁড়া গেঞ্জি, আর কারো গায়ে জামা নেই। শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন স্পষ্ট। আরেকটি ভিডিওতে পুলিশ তাদের বেঁধে নিয়ে যাচ্ছে, সঙ্গে রয়েছে কয়েক শতাধিক গ্রামবাসী।
শিলং টাইমসসহ স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, গত শুক্রবার সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার সীমান্ত সংলগ্ন রংদাংগাই গ্রামে এক ২১ বছর বয়সী যুবকের ওপর হামলা, অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে শনিবার চার বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন—জামালপুরের জাহাঙ্গীর আলম (২৫), মারুফুর রহমান, নারায়ণগঞ্জের সায়েন হোসেন ও কুমিল্লার মাহফুজ রহমান। এর মধ্যে মারুফুর নিজেকে পুলিশ সদস্য দাবি করেছেন।
রোববার গ্রেপ্তার হন পঞ্চম আসামি মোবারক মিয়া, যিনি সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার কলাগাঁও গ্রামের বাসিন্দা।
দক্ষিণ-পশ্চিম খাসি হিলসের পুলিশ সুপার বি. জিরওয়া জানান, রবিবার সকাল ৭টার দিকে গ্রামবাসীর সহায়তায় মোবারককে খোঞ্জয় এলাকার গিলাগোড়া গ্রাম থেকে আটক করা হয়। তিনি ওই হামলা ও অনুপ্রবেশকারী দলের সর্বশেষ সন্দেহভাজন।
শিলং টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৮ আগস্ট রাতে সশস্ত্র বাংলাদেশিদের একটি দল রংদাংগাই গ্রামের বলসরাং এ. মারাককে হামলা করে অপহরণ করে। এরপর পুলিশ, বিএসএফ ও স্থানীয়রা সীমান্ত এলাকায় ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করে। খোঞ্জয় গ্রামে একজন ধরা পড়ে এবং চিবক বনাঞ্চল থেকে বাকি তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মেঘালয়ের হাইল্যান্ড পোস্ট জানায়, অভিযানে ঘটনাস্থল থেকে বাংলাদেশের পুলিশ কনস্টেবলের পরিচয়পত্র, হাতকড়া, পিস্তলের হোলস্টার, ম্যাগাজিনের কভার, রেডিও সেট, মোবাইল ফোন, মুখোশ, কুঠার, তার কাটার যন্ত্র, বাংলাদেশি মুদ্রা ও অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে।
ভারতে গ্রেপ্তার ৫ বাংলাদেশি, দাবি ‘আমরা শেখ হাসিনার দল করতাম’
RELATED ARTICLES