ঠাকুরগাঁও জেলার পাঁচ উপজেলা মিলে গঠিত তিনটি সংসদীয় আসনের মধ্যে ঠাকুরগাঁও-১ (সদর) আসনটি দীর্ঘদিন ধরে ভিআইপি আসন হিসেবে পরিচিত। এখানে চারজন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, যাদের মধ্যে তিনজনই মন্ত্রী হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন।
এ আসনের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দলে তিনি সবচেয়ে হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত এবং কার্যত প্রতিদ্বন্দ্বীহীন। ইতোমধ্যে তার পক্ষে ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। তৃণমূলের বিশ্বাস, জনসমর্থনেও তিনি এগিয়ে থাকবেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একাধিকবার কারাবন্দি হয়েছেন মির্জা ফখরুল। জেল-জুলুম, শতাধিক মামলার বোঝা এবং ১৭ বছরের দীর্ঘ ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের অভিজ্ঞতা তার ঝুলিতে রয়েছে। নানা বাধা ও ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও তার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থেকেছে স্থানীয় বিএনপি।
তবে এবার ধানের শীষের প্রার্থীকে চ্যালেঞ্জ জানাতে মাঠে নামছেন আরেক হেভিওয়েট প্রতিদ্বন্দ্বী— ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি, ঠাকুরগাঁও উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান, জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসেন। দলের নেতাকর্মীরা তার পক্ষে ব্যানার-পোস্টার ও প্রচারণার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি তুলে ধরছেন।
দেলোয়ার হোসেনও আওয়ামী শাসনের ভুক্তভোগী। ছাত্রশিবিরের সভাপতি থাকাকালে গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘসময় অমানবিক নির্যাতনের শিকার হন। থানায় থানায় ঘুরিয়ে কয়েক মাস পেটানো হয় এবং বছরের পর বছর কারাগারে থাকতে হয়। অন্তত দেড়শ মামলার আসামি হয়ে এক দশকের বেশি সময় আদালতে হাজিরা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, “এই আসনে অতীতে তিনটি দলের শাসন দেখেছে মানুষ। কেউই সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মাদক ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ উপহার দিতে পারেনি। জনগণ এখন সৎ, দক্ষ, দেশপ্রেমিক ও আল্লাহভীরু প্রার্থীর অপেক্ষায় আছে, আর সেই প্রত্যাশা পূরণে আমরা কাজ করছি।”
অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর তেমন তৎপরতা নেই। মাঝে মাঝে কিছু কর্মসূচি চোখে পড়লেও ভোটযুদ্ধে নামতে সক্ষম এমন কোনো প্রার্থী এখনো ঘোষণা দেয়নি তারা।