চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার খাতা চ্যালেঞ্জের ফলে প্রায় ৪ হাজার শিক্ষার্থী নতুন করে পাস করেছে। তাদের মধ্যে ৭ জন ফেল থেকে সরাসরি জিপিএ ৫ অর্জন করেছে। এছাড়া বিভিন্ন গ্রেড থেকে নতুন করে জিপিএ ৫ পেয়েছে ১,০৪৫ জন শিক্ষার্থী। রোববার ১১টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড পুনর্নিরীক্ষণের ফল প্রকাশ করলে এই তথ্য জানা যায়।
এ বছর খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন গত তিন বছরের তুলনায় সবচেয়ে বেশি হয়েছে—গত বছরের তুলনায় আবেদন বেড়েছে প্রায় ৭১ শতাংশ। শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের মতে, এই ফল পরিবর্তন পরীক্ষকেদের ‘চরম গাফিলতি’ ও পরীক্ষা মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় বিশৃঙ্খলার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
তথ্য অনুযায়ী, এ বছর মোট ১৫,২৪৩ জন শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে, যা ২০২৪ সালের তুলনায় ৬,৩৬৮ জন বেশি। ৩,৯২৫ জন ফেল থেকে পাস করেছে, এর মধ্যে কারিগরি বোর্ডে সর্বোচ্চ ২,৬৫৪ জন, মাদ্রাসা বোর্ডে ৯৯১ জন, এবং অন্যান্য বোর্ডে বাকি শিক্ষার্থীরা পাস করেছে। ফেল করা ৭ জনের মধ্যে ঢাকা ও কারিগরি বোর্ডে ৩ জন করে এবং ময়মনসিংহে ১ জন জিপিএ ৫ পেয়েছে।
শিক্ষা বোর্ড জানায়, পুনর্নিরীক্ষণে চারটি বিষয় দেখা হয়—প্রশ্নের সঠিকভাবে নম্বর দেওয়া, প্রাপ্ত নম্বর সঠিকভাবে যোগ করা, ওএমআর শিটে সঠিকভাবে নম্বর তোলা, এবং বৃত্ত ভরাটের সঠিকতা। তবে পরীক্ষকের দেওয়া মূল নম্বর পরিবর্তনের সুযোগ নেই; কেবল ভুল গণনা বা তথ্য স্থানান্তরের ত্রুটি সংশোধন করা হয়।
সংশ্লিষ্টদের মতে, তাড়াহুড়ো করে খাতা মূল্যায়ন, কম সম্মানী, পরীক্ষক সংকট, এবং অপর্যাপ্ত সময়ই ভুলের মূল কারণ। অনেক সময় একজন পরীক্ষককে মাত্র ১০-১২ দিনের মধ্যে ৫০০-৬০০ খাতা মূল্যায়ন করতে হয়।
বোর্ডের নীতিমতে, ইচ্ছাকৃত বা বড় ধরনের ভুলের জন্য পরীক্ষককে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়, অপরাধ গুরুতর হলে বেতন-ভাতা বন্ধের সুপারিশ করা হয়, এবং প্রয়োজনে ফৌজদারি মামলাও হতে পারে। বর্তমানে চ্যালেঞ্জ হওয়া খাতাগুলোর ভুলের ধরন দেখে দায়ী পরীক্ষকদের শনাক্তের প্রক্রিয়া চলছে।