ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা দখলের ইসরায়েলি পরিকল্পনাকে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি হিসেবে আখ্যায়িত করেছে আরব লীগের স্থায়ী প্রতিনিধিরা। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে “গণহত্যা ও অনাহারের নীতি” অবিলম্বে বন্ধে আন্তর্জাতিক চাপের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
বার্তাসংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদনে বলা হয়, রবিবার মিসরের কায়রোতে এক জরুরি বৈঠকে আরব লীগ এই পরিকল্পনাকে “সব আরব রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সরাসরি আগ্রাসন” এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে নিন্দা জানায়।
বৈঠক শেষে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, গাজায় ইসরায়েলের পূর্ণ সামরিক দখল, ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুতকরণ এবং গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীর—যার মধ্যে জেরুজালেমও রয়েছে—এ “আগ্রাসন, গণহত্যা ও জাতিগত নির্মূল” চালানোর পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক আইন ও কনভেনশন স্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করে।
আরব লীগ বলেছে, এসব পদক্ষেপ কেবল আরব রাষ্ট্রগুলোর জাতীয় নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক স্বার্থের পরিপন্থী নয়, বরং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্যও মারাত্মক হুমকি।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে, যা বিশ্বব্যাপী সরকার ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে।
আরব লীগ মিসর-কাতারের যৌথ মধ্যস্থতার প্রচেষ্টার প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রকে, ইসরায়েলের আগ্রাসন ও অবৈধ দখলদারিত্ব বন্ধে কার্যকর ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ৬১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং উপত্যকাটি ভয়াবহ মানবিক সংকটে পড়েছে। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া অঞ্চলটি বর্তমানে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে।
এর আগে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়ায়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা চলছে।