হঠাৎ পেঁয়াজের বাজারে উত্তাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। রমজান ও কোরবানির ঈদে স্থিতিশীল থাকা পেঁয়াজের দাম এখন প্রতিদিনই বাড়ছে। মাত্র এক সপ্তাহে দেশের অন্যতম বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের কেজির দাম ২৫ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে। ভোক্তারা বলছেন, এটি এক ধরনের অরাজকতা। তারা মনে করেন, বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। এর ফলে হঠাৎ করে পেঁয়াজের সংকট সৃষ্টি হয়নি, বরং প্রশাসনের যথাযথ তদারকির অভাবেই এমন অবস্থা হয়েছে। অন্যদিকে, ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনেকেই দাম বাড়ার প্রকৃত কারণ জানে না; কেউ সরবরাহ কম হওয়াকে দায়ী করছেন।
তদন্তে জানা গেছে, মঙ্গলবার চাক্তাই ও খাতুনগঞ্জে ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮৫ টাকায়, যা গত সপ্তাহের শুরুতে ছিল ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা। দেশি পেঁয়াজের দাম এখন মানভেদে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, যা আগে ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। চট্টগ্রামের খুচরা দোকানে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ৯০ থেকে ৯৫ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ৮৫ থেকে ৯০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
খাতুনগঞ্জের এক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, ভারত থেকে পেঁয়াজের সরবরাহ হঠাৎ কমে গেছে। মৌসুমের শেষের দিকে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহও কমেছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় দাম বাড়ছে এবং ভবিষ্যতে আরও বাড়তে পারে। বাজারের দোকানি মুসলিম উদ্দিন বলেন, পাইকারি বাজারের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের খুচরা দামে বাড়াতে হয়েছে, তবে দাম নিয়ন্ত্রণ খুচরা ব্যবসায়ীদের হাতে নেই।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘সরবরাহ কম’ হওয়া শুধু অজুহাত। বাস্তব কারণ হলো, কৃষকের হাতে পেঁয়াজ নেই, সব পেঁয়াজ এখন বেপারী ও আড়তদারদের দখলে। তারা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছে। প্রশাসনও বাজারের পর্যাপ্ত তদারকি করছে না।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মাহবুবুল হক জানিয়েছেন, খাতুনগঞ্জে নিয়মিত অভিযান চলছে। মঙ্গলবারও অভিযান পরিচালিত হয়েছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।